“কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
গ্রন্থটি হেতু বা যুক্তিবিদ্যা, ত্রয়ী বা ধর্মবিদ্যা, বার্তা বা কৃষি উৎপাদন, পশুপালন এবং বাণিজ্যবিষয়ক বিদ্যা এবং দণ্ডনীতি বা রাজ্য পরিচালনার অনুশাসনবিষয়ক বিদ্যার ভিত্তিতে প্রণীত। এখানে যেমন যৌক্তিক শাসনব্যবস্থার উপর গুরুত্বের সাথে আলােকপাত করা হয়েছে, তেমনি দুষ্টের দমনের ক্ষেত্রে নির্দেশিত হয়েছে নির্মম পন্থার নানা দিক। জীবনের সকল পর্যায়ে নৈতিক মূল্যবােধের উপর গুরুত্বারােপ সত্ত্বেও শক্রনিধনের ক্ষেত্রে বিসর্জিত হয়েছে সমস্ত মূল্যবােধ, নৈতিকতা এবং ধর্মীয় বিধিনিষেধ । ন্যায়ধর্ম প্রতিষ্ঠার স্বার্থে উপেক্ষিত হয়েছে ন্যায্যতা। তদুপরি সংহত সমাজব্যবস্থার জন্য নির্দেশিত হয়েছে দণ্ডের নানমুখী দিক। কৌটিল্যের মতে—যেখানে দণ্ড নেই সেখানে রাষ্ট্র নেই। আইন প্রয়ােগের ক্ষেত্রে রাজপুত্র এবং সাধারণ প্রজার প্রতি সমদৃষ্টি প্রদানের আহ্বান সত্ত্বেও সমাজের সুবিধাভােগী শ্রেণি তথা ব্রাহ্মণদের জন্য দেওয়া হয়েছে বড় ধরনের ছাড়। রাজদ্রোহিতার মতাে অপরাধের ক্ষেত্রেও তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি রহিত করা হয়েছে। এ-ধরনের অনেক সাংঘর্ষিক অনুষঙ্গের পরও গ্রন্থটি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল হিসেবে অনিসন্ধিৎসু মহলের কাছে আজও সমাদৃত হয়ে আসছে।