ছােট্ট ছেলেমেয়েগুলাে স্থানু হয়ে বসে থাকে বােমকেট ডাক্তারের মুখ থেকে তার ছােটবেলার গল্প শুনে। শেষ বিকেলের রােদ এসে গড়িয়ে পড়ে চরের কিনার জুড়ে। একরাশ বালি শেষবারের মতাে চকমকিয়ে ওঠে। আর দূরে নদীর বুকে অনেকদিন পর তারা যেন দেখতে পায় লাল-সবুজ পাল তােলা সারি সারি নৌকা। তাদের মনে হয়, বাংলাদেশটা ভেসে-ভেসে এগিয়ে আসছে তাদেরই দিকে। তারা বলাবলি করে, সামনের ছুটিতেই দল বেঁধে বিজনবাবুর ভিটায় যাবে। খানসেনাদের তাে এখন আর পাওয়া যাবে না, তবে সবুর আলীদের তারা খুঁজে বের করবে। অংশুকে মেরে ফেলার জন্যে, অংশুর মাকে মারার জন্যে শাস্তি ওদের পেতেই হবে। এ কাজটা করতেই হবে ওদের। না হলে কোন মুখ নিয়ে তারা দেখতে যাবে বিজনবাবুর ভিটা? বিজনবাবুর ভিটা কোথায় জানে না ওরা। তবু তারা টের পায়, পাতার একটা বাঁশি বাজছে বাতাসের ছোঁয়া লেগে। মুক্তির আলাে আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আহ্বান ছড়িয়ে দিচ্ছে তা বিস্তৃত প্রান্তরে।