নাজিব আল-কিলানি মিসরের বিশিষ্ট আরবি সাহিত্যিক। ইসলামি ইতিহাসকে উপজীব্য বানিয়ে সাহিত্যচর্চা করে যে সকল লেখক মুসলিম বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি তাদের একজন।
তিনি ইতিহাসের কেবল সাধারণ পাঠক নন; বরং ইতিহাসের অলিগলি যেমন চষে বেড়িয়েছেন তেমনি তার অন্ধকার কুঠুরিতেও ঢুঁ মেরেছেন। ইতিহাস থেকে মুক্তো-মাণিক কুড়িয়ে এনে তিনি পরিবেশন করেন তাঁর গল্প-গদ্য-উপন্যাসে। তাঁর গল্প গুলো পাঠ করলে দেখা যাবে যে ওই সময়ের ইতিহাস আমাদের জানা থাকরেও এ-ঘটনাগুলো আমাদের জানা ছিলো না। শিল্পমানমণ্ডিত হওয়ার ফলে তাঁর গল্পগুলো পাঠকের সাহিত্যরুচি তৈরি করে এবং নতুন চেতনা জাগ্রত করে। এক্ষেত্রে তিনি বেশ সাফল্যের পরিচয় দিযেছেন।
নাজিব আল-কিলানি ইসলামি ইতিহাসের শোককর, বীরত্বব্যঞ্জক এবং কখনো হাস্যরসে সরস গঠনাগুলো তুলো আনেন কলমের ডগায় এবং মজলিসি ঢংয়ে পরিবেশন করেন তাঁর বয়ান। মনের মাধুরি ও পরিমিত আবেগের মিশেলে তিনি যে-কথ্যরীতিতে অল্প করেন তা পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাঁর ভাষা পরিচ্ছন্ন ও সাবলীল।
নাজিব আল-কিলানি বড়োদের জন্য যেমন লেখেন, লেখেন ছোটোদের জন্যও। সবার সামনে তিনি উন্মোচন করেন সত্য এবং সবাইকে উদ্দীপ্ত করেন নতুন চেতনায়। তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা তিরিশেরও বেশি। উল্লেখ্যযোগ্য কিছু গ্রন্থ হলো: ‘লায়ালি তুরকিস্তান’; ‘আমালিকাতুশ শিমাল’; ‘উযারাউ যাকার্তা’; ‘হারাতুল ইয়াহুদ’; ‘আয-যিল্লুল আসওয়াদ’; ‘কাতিলু হামযা’; ‘উমর ইয়াযহারু ফিল কুদ্স’; ‘মালিতাতুল ইনাব’ এবং দুই খন্ডে প্রকাশিত ‘নুরুল্লাহ’।
আমি তার ‘রিজালুল্লাহ’ বইটির অনুবাদ করেছি। বইটি কিশোর ও তরুণদের জন্য লেখা। একটি গল্পের নামে অনূদিত বইটির নামকরণ করা হয়েছে। এই বইয়ে আছে বারোটি গল্প। ইতিহাসের ঘটনাবলি কেন্দ্র করে লিখিত হলেও প্রতিটি গল্পের বিষয় আলাদা, ভাব ও চেতনাও আলাদা। গল্পগুলো পড়ে পাঠক যেমন আনন্দিত হবেন, সঙ্গে সঙ্গে বেদনাবোধও জাগবে তাঁর।