যে-জাতির সভ্যতা যত প্রাচীন, তার মানসিক দাসত্বের বন্ধনও ততই বেশি। ভারতের সভ্যতা সুপ্রাচীন, এবং এই প্রাচীনতা সম্পর্কে সন্দেহের কোনাে অবকাশ নেই। আর তাই এই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে যে-পথ, সে-পথেও রয়েছে অনেক প্রতিবন্ধকতা। মানসিক দাসত্ব প্রগতির পথে সবচেয়ে বড়াে বাধা। আমাদের দুঃখ-কষ্ট, আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যা এত বেশি এবং এত জটিল যে, অত্যন্ত মুক্ত মনে সে-সমস্যাগুলি নিয়ে যদি আমরা চিন্তা-ভাবনা না করি, তাহলে এই সমস্যাগুলিকে অতিক্রমের পথও আমরা খুঁজে পাব না। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ভারতে জাতীয়তার জোয়ার আসে, বিশেষ করে তরুণ শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে। এ-জাতীয়তাবােধ অনেকাংশে প্রশংসনীয় হলেও, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে অন্ধ জাতীয়তাবােধও ছিল। সত্যি-মিথ্যে—যেভাবেই হােক না কেন, তারা দেশের ইতিহাসকে সবচেয়ে সাচ্চা এবং গৌরবময় প্রমাণিত করার জন্যে, অর্থাৎ তাদের মুনি-ঋষি, লেখক, চিন্তাবিদ, রাজারাজরা এবং রাজনৈতিক সংস্থাগুলির মধ্যে বিংশ শতাব্দীর নানা উল্লেখযােগ্য ও মহত্ত্বপূর্ণ বিষয়বস্তুগুলিকে প্রত্যক্ষ করা ছিল তাদের জাতীয়তাবােধের এক অঙ্গ।…..