অহনা নাসরিনের ‘বিমূর্ত, যে নদীতে ভাসি উপন্যাসটিতে সমাজের নানা অসঙ্গতি, রীতি- নীতি, ব্যক্তি মানুষের দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং আশা- নিরাশার দোলাচল লক্ষ্য করা যায়। কেন্দ্ৰীয় চরিত্রে রয়েছেন ‘অনিতা’ নামের এক নারী, যিনি বিধবা এবং মধ্যবিত্ত হিন্দু পরিবারের। স্বামী মারা যাওয়ার পর স্কুল শিক্ষিকা অনিতার সংসারে আর্থিক অসঙ্গতি না থাকলেও জীবনের প্রয়োজনে তাকে এক সময় অসম পরকীয়ায় আসক্ত হতে দেখা যায় শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সঙ্গে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়, ‘কখনও কখনও পেটের ক্ষুধার চেয়ে শরীরী ক্ষুধা বড় হয়ে দেখা দেয়’। মৃত্যুপথযাত্রী অনিতার কাছ থেকে পাওয়া একটি ‘ডায়েরি’ থেকে উপন্যাসের আখ্যান বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাকারীও একজন শিক্ষিকা। আখ্যানে যেমন সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব রয়েছে তেমনি পার্শ্বিক অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে প্রেম ও বিরহকাতরতা। যা আমাদের সমাজেরই বাস্তবচিত্র। গঠনগত সৌকর্য এবং আখ্যানের বিষয়বস্তু বিবেচনায় এটিকে সামাজিক উপন্যাস বলা যেতে পারে। এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস হলেও সাহিত্যের শিল্পমান বিবেচনায় তিনি বেশ সফল। উপন্যাসটি পাঠকের মননের রসদ জোগাবে, তা জোর দিয়েই বলা যায়।