যাদের সঙ্গে আমি কবিতা যাপন করেছি,অরবিন্দ চক্রবর্তী তাদের মধ্যে প্রধান।আমার অভিজ্ঞতা বলে-বাক্যসাধনা,শব্দ-সাধনার দিক থেকে অরবিন্দ জন্মগতভাবে অনেকটা এগিয়ে ।এর পেছনে কাজ করেছে তার পারিবারিক আবহ।তাই প্রচলের অচল ডিঙিয়ে এগিয়ে থাকতে ওকে খুব বেশি আমিষ পোড়াতে হয়নি।নতুন সুন্দরের খোঁজে মনটাকে সহজে নিয়োগ করতে পেরেছে। অরবিন্দ ব্যাকরণ না-মানা কবি নয়।কিন্তু ব্যাকরণকে বাঁকাতে পারা লোক।কোথাও উচ্চারিত কোনো সুন্দর নতুন শব্দ যদি অরবিন্দের জলের ভেতরে পড়ে,তবেই হয়েছে।ওটাকে নাভির সুতোয় ঢেকে সে নিজস্ব সম্পদ বানিয়ে তুলেবেই । কল্যাণ সুন্দরের উপজাত।তাই সুন্দরের স্রষ্টা শিল্পী যখন উদ্যত,কল্যাণ তখন অবনত হয়ে ধরা দিয়ে বাঁচে।কারণ স্রষ্টা ছাড়া অন্য কারও থলেতে তার আশ্রয় নেই।স্রষ্টার তিনটি প্রবণতা:সৃজন,লালন ও সংহার।প্রেমিক,খেয়ালি,রাগত,সচৈতন্যে অরবিন্দের কবিতা-প্রবণতায় আমি তিনটির বিচিত্র সন্নিবেশ দেখেছি।অরবিন্দ সৃজনে হিসেবি,লালনে উদার আর সংহারে জিঘাংসু। এই সন্নিবেশ শক্তি কী দূর্বলতা জানি না।শুধু জানি,যা দূর্বলতা,তা-ই শক্তি।যা শক্তি,তা-ই দুর্বলতা।