“আলকেমি” বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
আলকেমির ইতিহাস ও বিজ্ঞান বিষয়ে সম্ভবত এটি প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ বাংলা গ্রন্থ। প্রাকৃতিক রুপান্তরে হাজার বছরে যে পরিবর্তন ঘটে, আলকেমিস্টের রসায়ানাগারে সেটা অতি অল্পসময়ে সম্পন্ন করাই ছিল এই বিদ্যার মােক্ষ। শুধু ‘পরশ পাথর দিয়ে সােনা বানানাে নয়, পাশাপাশি অমরত্ব অর্জন এবং শারীরিক ও মানসিক রুপান্তরও এর প্রতিপাদ্য ছিল। মনের সাথে জড়বস্তুর, কর্তার সাথে কর্মের সম্পর্ক। আলকেমি এবং দর্শনের অতি প্রাচীন সমস্যা। আলকেমি শাস্ত্রে তাই দেখা যায় ব্যবহারিক রাসায়নিক জ্ঞানের সাথে সাথে রহস্যময় ভাষায় প্রকাশিত মনােবৈজ্ঞানিক অনেক প্রতীক, চিত্রকল্প ইত্যাদির ব্যবহার। প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যে আলকেমির সূচনা থেকে শুরু করে মিশর, গ্রিক ও আরব সভ্যতায় এর বিকাশ এবং মধ্যযুগে ইউরােপে এর বিস্তার নিয়ে লেখক যথাসম্ভব সবিস্তারে আলাপ করেছেন এই বইটিতে। ভারত এবং চিনে আলকেমির স্বতন্ত্র ধারার অস্তিত্ব নিয়েও তিনি মনােযােগ দিয়েছেন। এছাড়া শিল্পকলা, সাহিত্য ও দর্শনের সাথে আলকেমির সম্পর্ক প্রাসঙ্গিকভাবে এসেছে; এসেছে আধুনিক মনােবিশ্লেষণী কয়েকটি ধারার ওপর আলকেমির প্রভাবের আলােচনা। আলকেমির বিপুল সম্ভার এখনাে আমাদের অজ্ঞাত, রসায়নসহ অনেকগুলাে শাস্ত্রের গবেষকদের মাঝে আবারাে আলকেমি নিয়ে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এর থেকে আমরা হয়ত বিজ্ঞানের একটা পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস, মন ও বস্তুর সম্পর্ক এবং সর্বোপরি প্রাকৃতিক জগতের সাথে আমরা কিভাবে সম্পর্কিত হতে পারবাে তার একটা দিক-নির্দেশনা পাব।