‘শেষ পূর্ণিমা’ নাটকটি সরাসরি সেলিম আল দীন স্যারের তত্ত্বাবধানে রচিত। নাটক লেখা যে কেবল কল্পনা আর বইয়ের পঠনেই হয় না, তার প্রমাণ ‘শেষ পূর্ণিমা। বাংলাদেশের লঘু নৃগােষ্ঠী গারােদের জীবন, ধর্ম ও সংস্কৃতি উঠে এসেছে এ নাটকে। অনেক জায়গায় গারাে ভাষাও ব্যবহৃত হয়েছে। এই নাটক রচনার বিষয়টি সেলিম আল দীনই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তার আদেশে সে সময় একাধিকবার বিরিশিরি ও সুসং দূর্গাপূরের গারাে পাহাড় অঞ্চলে গিয়েছি, থেকেছে। এ শুধু নাটক রচনা নয়, গবেষণাও সেলিম স্যারের ভাষায় এটি ‘গবেষণা নাট্য। ‘চেতনার চারিপাশে আঁধার আরও গাঢ় হয়ে আসে’ নাটকে পাশাপাশি দুটো গল্প এগিয়ে চলে। একটি গল্পে একজন অন্ধ ও পঙ্গু একটি বই লিখছে, এমন একটি বই যেটি পড়লে মানুষের পাপশুদ্ধি হবে। হয়তাে তারা কোন একটি ধর্মগ্রন্থই লিখছে। নিজেদের পূর্ব পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই এই আত্মশুদ্ধি মূলক লেখা। মজার বিষয় হলাে অন্ধ শিক্ষিত, সে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখে আর পঙ্গুটি বলে যায়। তাদের যৌথ প্রয়াসে অচেনা এক বন্দীঘরে রচিত হতে থাকে ভিন্ন এক লেখা। ঝড় বৃষ্টির রাতে সেখানে হাজির হয় পাগলিনী এক নারী। অন্ধ ও পঙ্গুর দীর্ঘ সাধনার মাধখানে সে অচিরেই একটা প্রশ্নছুঁড়ে একটা দেয়াল তুলে দেয়। নাটকটিতে আমি বেশকিছু প্রশ্ন তুলেছি। উত্তর আমার নিজেরও জানা নেই। পাঠক, দর্শকের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রইলাম। জঁ রাসিনের বিশ্বখ্যাত নাটক ‘ফেইড্রা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি ফরিদা নাটকটি লিখেছি। বিদেশি নাটক দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে লিখলেও এটিকে আমি মৌলিক নাটক বলবাে। কেননা, একজন মৌলিক নাট্যকারের সকল স্বাধীনতাই আমি এ নাটকের ক্ষেত্রে অকাতরে গ্রহণ করেছি।