“মৎস্যকন্যা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
মেঘ, বৃষ্টি এবং রােদের মতােই চোখের সামনে বাতাসের অবিরাম ওড়াউড়ি দেখতে পায় শ্রমণা। এক-একটি আলাদা বাতাস অবিকল চিনে নিতে পারে সে। সেই বাতাসে যেন জড়িয়ে থাকে একটি করুণ বাঁশির সুর। কোথায় শুনেছে সেই সুর, শ্রমণার মনে পড়ে না। স্বপ্নের ভেতরে এক অসামান্য মিলনেও বাজে সেই সুর। স্বপ্নে দূর-সমুদ্রের জ্যোৎস্নামাখা নির্জনতায় অন্ধকারের মতাে এক প্রবল পুরুষ তাকে আদিগন্ত মথিত করেছিল। সেই পুরুষ যেন কোনাে প্রস্তরমূর্তির মতাে, তার সঙ্গে আলােক বা সমীরণের বিন্দুমাত্র মিল নেই। সমীরণের সঙ্গে সম্পর্ক জুড়িয়ে গেলে আলােকের সঙ্গে গােপনে এক নির্জন সমুদ্রে এসেছে সে। এই সেই স্বপ্নের সমুদ্র, অচেনা সৈকত, ঢেউডুবি, যে-নির্জন বালিয়াড়িতে পাথর-পুরুষের সঙ্গে মিলন হয়েছিল তার, যে-মিলন তার অবচেতনে ভাস্কর্যের মতাে প্রােথিত হয়ে গেছে। স্বপ্নের সেই মৈথুন-ভাস্কর্যের সঙ্গে অদ্ভুত সাদৃশ্য ঢেউডুবির মন্দির বিগ্রহের ঘটনাচক্রে সেই প্রাচীন বিগ্রহ চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে শ্রমণা ও আলােক। শ্রমণার আকর্ষণে জড়ায় ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার ভূষণ ও পুলিশ অফিসার নিৰ্কর। ভােরের বালিয়াডিতে নুলিয়া বুধিয়া আবিষ্কার করে শ্রমণার শব। সমুদ্র, প্রণয়, লােভ, অপরাধ, মৃত্যু ওতপ্রােত হয়ে গেছে এই আশ্চর্য থ্রিলারে, যা শেষপর্যন্ত কবিতার মতােই রহস্যময়।