“ব্ল্যাক অর্ডার” বইটির প্রথম অংশ থেকে নেয়াঃ
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শেষ কয়েক মাসে যখন জার্মানির অবস্থা একেবারে শােচনীয় তখন কে কার আগে নাৎসি বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন প্রযুক্তি লুঠ করবে তা নিয়ে মিত্রবাহিনীর মধ্যে নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এই লুঠ প্রতিযােগিতায় নেমেছিল ব্রিটিশ, আমেরিকান, ফ্রেন্স এবং রাশিয়ানরা। যে যার মতাে করে নিজের দেশের জন্য লুঠপাট চালিয়েছিল। অনেক পেটেন্ট লুষ্ঠিত হয়েছিল তখন। যেমন : নতুন ভ্যাকুয়াম টিউব, চমকপ্রদ কেমিক্যালস, প্লাস্টিকস্ এমনকী ইউ ভি লাইটসহ পাস্তুরিত তরল দুধ! কিন্তু স্পর্শকাতর অনেক পেটেন্ট স্রেফ গায়েব হয়েছিল। যেমন : অপারেশন পেপার ক্লিপ; একশ’ নাৎসি ভি-২ রকেট বিজ্ঞানীদেরকে গােপনে নিযুক্ত করে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছিল তখন। পরে অপারেশন পেপার ক্লিপ সম্পর্কে তেমন কিছু আর জানা যায়নি।
তবে নিজেদের প্রযুক্তি বিনা যুদ্ধে সপে দেয়নি জার্মানরা। গােপন প্রযুক্তি ও পরবর্তী রাইখ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য তারা অনেক চেষ্টা করেছিল। বিজ্ঞানীদের খুন করা, রিসার্চ ল্যাব ধ্বংস করে দেয়া থেকে শুরু করে গুহায় ব্লুপ্রিন্ট লুকিয়ে রাখা, লেকের পানিতে ডুবিয়ে দেয়া, ভূগর্ভস্থ কোটরে পুঁতে দেয়ার মতাে নানান পদক্ষেপ নিয়েছিল তারা। আর এসবই ছিল মিত্রবাহিনীর হাত থেকে নিজেদের প্রযুক্তি রক্ষা করার বিভিন্ন কৌশল। নির্বিচারে লুণ্ঠন অভিযান চলেছিল। নাৎসিদের রিসার্চ এবং অস্ত্রের ল্যাব ছিল সংখ্যায় শত শত। কতগুলাে ছিল মাটির নিচে, বাকিগুলাে জার্মানের বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানাে-ছিটানাে। এছাড়াও অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া এবং পােলাভেও তাদের অস্তিত্ব ছিল। তারমধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় ছিল ব্রিসলাউ শহরের বাইরে অবস্থিত একটি রূপান্তরিত খনি। রিসার্চ ফ্যাসিলিটির কোড নাম ছিল “দ্য বেল”। এই রিসার্চ ফ্যাসিলিটির আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় রিপাের্ট করেছিলেন, অদ্ভুতুড়ে আলাে দেখা, রহস্যময় মৃত্যু ও বিভিন্ন অজানা রােগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা।
রাশিয়ান ফোর্স খনিতে পৌছেছিল সবার আগে। তারা গিয়ে রিসার্চ ফ্যাসিলিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পায়। এই প্রজেক্টের সাথে জড়িত ৬২ জন বিজ্ঞানীর সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। আর ফ্যাসিলিটির বাদ বাকি সব সরঞ্জাম কোথায় গায়েব হয়েছিল সেটা এক ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ জানে না।
সে যা-ই হােক, তবে এতটুকু নিশ্চিত “দ্য বেল”-এর অস্তিত্ব সত্যি সত্যিই ছিল।