“রঙের কবি অসিতকুমার হালদার” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
ঐতিহাসিক বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫) আন্দোলনের সময় কলকাতা সরকারি শিল্পবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যতিক্রমী গুরুপরম্পরা শিক্ষাধারায় গুরু এবং তার কয়েকজন প্রতিভাবান শিক্ষার্থী চিরাচরিত স্রোতে গা না ভাসিয়ে বিপরীতে সাঁতরে নিঃশব্দে ঘটিয়েছিলেন ভারতশিল্প বিপ্লব। তার সূচনায় অজন্তা গুহাচিত্র নকলকাজের দুর্লভ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় নয়ন খুলেছিল। সুপ্রাচীন ভারতশিল্পের গভীর ও দৃঢ় ভিতটির সন্ধান তারা পেয়েছিলেন। ক্রমে সেই আন্দোলনের ঢেউ পরিব্যাপ্ত হয়েছিল ভারতের পূর্ব পশ্চিম থেকে উত্তর দক্ষিণ সর্বত্র— এমনকী প্রদর্শনীর মাধ্যমে বহির্ভারতে সাড়া ফেলেছিল প্যারিস, লন্ডন, বার্লিনের মতাে ইউরােপের মুখ্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলিসহ আমেরিকায়ও। এসবেরই সাক্ষী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, আর্নেস্ট হ্যাভেল, সিস্টার নিবেদিতা, কাকুজো ওকাকুরা, আনন্দ কুমারস্বামী, উইলিয়ম রদেনস্টাইন, ড. স্টেলা ক্ৰামরিশ প্রমুখ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি, শিল্পী ও রসজ্ঞ শিল্পবের্তাগণ। আজ যা ‘বেঙ্গল স্কুল’ নামে পরিচিত, আদতে সেই নব্য-ভারতীয় শিল্পকলার অন্যতম অগ্রণী পথিকৃৎ শিল্পী- যাঁকে শিল্পালােচক আইরিশ কবি জেমস কাজিন্স প্রথম ‘রঙের কবি’ আখ্যায় ভূষিত করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথও যে স্নেহের সম্পর্কে নাতিটির ছবিতে কাব্য ও চিত্রের ভাবসমৃদ্ধ সমাবেশ ও সৌকুমার্য দেখতেন, প্রাণবন্ত সেই শিল্পী অসিতকুমার হালদারের প্রথম জীবনালেখ্য এই গ্রন্থ।