“প্রাক-ইতিহাস” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
আপনার হাতের মুঠোয় ধরা প্রাক ইতিহাসের এই যে রচনাসম্ভার এতে রয়েছে ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন সময়কালের মানবজীবনের বিবরণ-কথা। অনেক কাল আগের কথা; কোনাে লিপিবদ্ধ কথাচিত্রের আলােয় প্রত্যক্ষে বা পরােক্ষে এই প্রাচীন অন্ধকার উদ্ভাসিত হবারও আগের সময়কথা। ভারতবর্ষের মানুষের ইতিহাস— সে এক বিশাল পরিকল্পনা। এ হলাে তারই একাংশ কিন্তু আপনাতে আপনি সুসম্পূর্ণ হয়ে ওঠার এক আকাঙক্ষা। প্রথম অধ্যায়ে ভারতের ভূতাত্ত্বিক গঠন প্রক্রিয়া, তার জলবায়ু এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের (সাধারণ উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল) পরিবর্তনের কথা আলােচিত হয়েছে। অবশ্যই ইতিহাস এবং প্রাক-ইতিহাসের সঙ্গে যতটুকু প্রাসঙ্গিক ততটুকুই, তার বেশি নয়। দ্বিতীয় অধ্যায়ে গােটা বিশ্বের প্রেক্ষিতে মানুষের ইতিবৃত্ত আর তারপরে ভারতবর্ষের অভ্যন্তরে তার কাহিনীপট। কেবলি বদলে-যাওয়া কাজের হাতিয়ারে সংশ্লিষ্ট এদের স্রষ্টা এক মানব গােষ্ঠীর কাহিনী। প্রধানত কৃষির আবিষ্কার আর শশাষণে-গড়া সম্পর্কের সূচনাকাল বিবৃত হয়েছে তৃতীয় অধ্যায়ে।
প্রামাণ্য রচনায় আর সাময়িক পত্রে একেবারে সাম্প্রতিক যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তারই ভিত্তিতে উপস্থাপনার প্রয়াস করা হয়েছে এই তিনটি অধ্যায়ে।
এই রচনাতে এবং একই সঙ্গে মানুষের ইতিহাসের পরবর্তী অংশে রচনাশৈলীকে ‘লােকপ্রিয়’, অলংকৃত কিংবা আষাঢ়ে না করে সরল, অনাড়ম্বর রাখার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক পরিভাষার ব্যবহার যতটা সম্ভব কম করা হয়েছে আর প্রথম ব্যবহারের সময় প্রত্যেকটি পারিভাষিক শব্দের একটা কাজ-চালানাে-গােছের ব্যাখ্যা দেবারও চেষ্টা করা হয়েছে। অবিশেষজ্ঞ পাঠকের কাছে পাছে কোনাে সংক্ষিপ্ত শব্দরূপ অর্থহীন হয়ে পড়ে, তাই সেগুলােকেও এড়িয়ে চলা হয়েছে।