একটি প্রাচীর ঘেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচলায়তন। এর ভেতরে বাইরের কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করে না। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আচার্য, উপাচার্য, উপাধ্যায়, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবাই আছে। এ প্রতিষ্ঠানের পাঠদান পদ্ধতি প্রাচীনকালের এবং নিয়মকানুন অত্যন্ত কঠিন। বিদ্যায়তনটির শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কঠোর শাস্তি পেতে হয়। এখানে শাস্ত্রীয় আচার-আচরণ ও মন্ত্র শেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা অর্থ না বুঝেই মন্ত্র মুখস্থ করে, একমাত্র ব্যতিক্রম শিক্ষার্থী পঞ্চক। তার কিছুতেই মন্ত্র মুখস্থ করতে মন বসে না। তার মনে নানা প্রশ্ন, নানা জিজ্ঞাসা, নানা সংশয়, অথচ অচলায়তনের নিয়ম হচ্ছে—এখানকার ব্রত, আচার, মন্ত্র ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো প্রশ্নজিজ্ঞাসা-সংশয় থাকতে পারবে না। বিনা প্রশ্নে, বিনা জিজ্ঞাসায়, বিনা সংশয়ে সব মেনে নিতে হবে। পঞ্চকের বড় ভাই মহাপঞ্চক অচলায়তনের একজন পণ্ডি, সে ‘অচলায়তনে’র আচার-আচরণ, তন্ত্রমন্ত্র কঠোরভাবে মেনে চলে। ‘অচলায়তনে’র শৃঙ্খলা কেউ ভঙ্গ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেয়। পঞ্চক ও মহাপঞ্চক দুই ভাই হলেও একে অপরের বিপরীত। প্রাচীন নিয়মকানুন-তন্ত্র-মন্ত্রে মহাপঞ্চকের যেখানে গভীর বিশ্বাস, পঞ্চকের সেখানে নানা সংশয়। পঞ্চক সবকিছুকেই পরীক্ষা করে নিতে চায় ।