“ভাষা ভাবনা” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
ভাষা দিয়ে আমরা মূলত নাম দিই, কাজ করি, কাজ দেখি, সময়কে বােধে পাই, স্থানকে বলি বস্তু রেখে দেবার পাত্র। আমাদের মনের জন্যে কোন স্থানের দরকার কিনা ভাবি না। আমরা বাস্তবকে গ্রহণ করি, তার উপর কাজ করি, তার কাছ থেকে ফলভােগ করি। গতি, পরিবর্তন, উদ্ভাবন, আবিষ্কার, কর্ম, কর্মের প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ ফল যেমন মানুষের বিশ্বে দেখা-বােঝা যায়, মানুষের ভাষা ঠিক তাই বহন করে। সেই জন্যেই অবিরাম গতি ধীর-মন্দ তীব্র পরিবর্তন, ধীর-দীর্ঘ-অগােচর, অতি-প্রত্যক্ষ, অতিগােচর আমাদের বেঁচে থাকার জগতে ‘ঘটনা’ অবিরাম দেখা দিচ্ছে। সেই জন্যেই কথারা আসে, কথারা বিদায় নেয়, শব্দরা অভিধানের তালিকায় ঢােকে, বেরিয়ে যায়, কিংবা অচল পয়সার মতাে পড়ে থাকে। এইভাবে ভাবতে পারলে ভাষা নিয়ে আলাদা ভাবনায় মশগুল থাকতে হয় না। নতুন ভাষা সৃষ্টির জন্যে সরকারি হিসেবে বা ব্যবস্থাপত্র হিসেবে প্রচার করতে কোমর বেঁধে লাগার দরকার হয় না। চেষ্টা করতে হয় না। নতুন ভাষা আপনিই আসে, চাইলেও আসে, না চাইলেও আসে।