“বাংলাদেশের ছোটগল্প” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা:
‘টুকা কাহিনী’ নামে একটি গল্প লিখে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন বুলবুল চৌধুরী। তখন বাংলাদেশ অল্প কিছুকাল মাত্র স্বাধীন হয়েছে। জোয়ার চলছে কবিতার । পুরােনাে কবিদের সঙ্গে নতুন অজস্র কবিও দেখা দিয়েছেন। অল্প হলেও দেখা যাচ্ছে কয়েকজন নতুন গল্পলেখককে। ওই একটিমাত্র গল্পে সবার দৃষ্টি এসে পড়ল এই নতুন লেখকের দিকে ।তারপর ‘মাছ’ এবং অন্যান্য। প্রথম থেকেই বুলবুল চৌধুরীকে দেখা গেল প্রতিশ্রুত নয়-পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত একজন গল্পকার হিসেবে। আজ দুই দশকের অধিক কাল পরে তাঁকে ‘সত্তরের দশকের গল্পকার’ বলে খাঁচায় বন্দি করে রাখা যাবে না। এখন তিনি বৃহৎ আকাশের বিহঙ্গ। বুলবুল চৌধুরী (জন্ম ১৯৪৮, ঢাকা)-র সমকালে অবশ্য সত্তরের দশকের আর কয়েকজন গল্পলেখকের প্রতিশ্রুতি ছিল, দু’একজন ছাড়া উচ্চাশার বালুগ্রাসে চলে গেছে তাদের অনেকেই। বুলবুল চৌধুরীও মাঝে মেতে উঠেছিলেন পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্রে, নাটকে। এইসব নানামুখী উদ্যম অবশ্য শিল্পের ঘেরের মধ্যেই থেকেছে। কিন্তু তারপর তিনি ফিরে এসেছেন আবার সাহিত্যে- গল্পে, উপন্যাসে, কিশােরতােষ রচনায়। জীবন নিয়েও কম। পরীক্ষা করেননি তিনি-ফিরে এসেছেন আবার সাহিত্যে, ফিরে ফিরে এসেছেন। এই ফিরে আসাই প্রমাণ করে, বুলবুল চৌধুরী জাত সাহিত্যিক। উদ্যমের চাঞ্চল্য সত্ত্বেও সৃজনশীলতার বাইরে তিনি কখনও যাননি। জীবন ও শিল্পের বিচিত্র বিশাল অভিজ্ঞতা তাকে সমৃদ্ধ। করেছে দিন-দিন।