ভূমিকাঃ
শিশু কিশোরদের নিজ ভূবনের মনোলোকের কাহিনী বের করে আনা সহজ ব্যাপার নয়। চারপাশের অফুরান প্রকৃতির ছায়ায় মায়ায় যে শিশু বড় হয়, পাখির গান, মোরগের ডাক, চারপাশে ঘুর ঘুর করা পোষা বিড়াল, বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা পথের ধারে শুয়ে থাকা কুকুর, লোকালয়ের পশু পাখিরা এবং প্রকৃতিই হয় শিশু কিশোরের খেলার সাথী। এ সমস্ত মিলিয়েই একজন শিশু কিশোরের এই সব দিনরাত্রি। সকালের রোদ মায়াবি শিশুর চোখ থেকে ঘুম সরিয়ে নেয়। রোদের নরম আলোয় শিশুকে টেনে নিয়ে যায়,কুল কুল রবে বহতা নদী তীরে। নদীতীরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল বটবৃক্ষের নিচে একজন কিশোর যখন মুখে কড়ে আঙ্গুলটি পুরে কল্পনা রাজ্যের বিশাল দিগন্তে হারিয়ে যায়,তখন বটের সবুজ পাতার নীচে চুপটি মেরে বসে থাকা কালো ময়না কিশোরকে দেখে ফিকফিকিয়ে হাসে। তখন হয়তোবা একটা পথহারা কুকুর ঘেউ শব্দ করে লেজ নাড়িয়ে কিশোরটির দিকে আনমনে তাকিয়ে থাকে।কিশোরের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে মা বট বৃক্ষের নীচে কিশোরের দেখা পেয়ে যান। দুষ্ট ছেলেকে হিরহির করে নিজ ঘরে তখন টেনে নিতে চান, ছলছলে হয় কিশোরের চোখ। সে কিশোরকে ঘরে বেঁধে রাখা কি এতো সহজ। গাঁয়ের আত্মভোলা মেন্দুমামার কাহিনী শুনে নিত্য নতুন অভিযানে ঘরের বাহির হতে কিশোরের মন আনচান করে। শুধু কি তাই,পোষা কুকুররাই কম যায় কিসে? গাঁয়ের ইতল বিতল পথে লেজ উঁচিয়ে দৌড়ানো কুকুরেরা বটতলার ভোজসভায় মিলিত হয়। পিপড়াঁরা খাবার না পেয়ে যখন অভিমান করে অথবা বনবিড়ালদের শুমারি করতে গিয়ে মেন্দুমামা যখন চরম বিপদে পড়েন তা দেখে গাঁয়ের কিশোর ব্যথিত হয়। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এ সমস্ত মজার ঘটনাকে শামসুদ্দোহা চৌধুরী আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে “ভূতেরা বাড়িতে নাই’ গ্রন্থে তুলে এনেছেন।