“কাঁদো নদী কাঁদো” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
বিষয় ও শিল্প বিচারে বাংলা উপন্যাসের ক্ষেত্রে এক ব্যতিক্রমধর্মী, অভিনব ও গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস কাঁদো নদী কাঁদো। এ উপন্যাসে ব্যক্তি ও সমাজ জীবন, তার সঙ্কটকে রহস্য ও প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে এক সমৃদ্ধ শৈল্পিক জটিলতায় উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে কুমুরডাঙ্গা নামের দরিদ্র মহুকুমা শহরের জনজীবন, স্টিমার ঘাট উদ্ভোধন কালে স্থানীয় হিন্দু জমিদারকে আমন্ত্রণ না জানানোের ফলশ্রুতিতে তার লেলানাে লাঠিয়ালদের দৌরাত্ম তথা প্রতিশােধস্পৃহা বা পেশিশক্তির আধিপত্য, বাকাল নদীতে চর পড়ায় অনিশ্চিত কালের জন্য তার স্টীমার ঘাট বন্ধ হওয়া, তাতে চাকরি হারানাে কর্মচারী খতিব মিঞার অসহায়ত্ব, বন্ধ ঘাট নিয়ে উকিল কফিল উদ্দিনের ধারনা, তা চালুর জন্য তার তথাকথিত সংগ্রাম বা প্রচেষ্টা, নতুন হাকিম মুহাম্মদ মুস্তফা ও তার বাগদত্তা খােদেজার মৃত্যু বা আত্মহত্যা রহস্য, তাৎপর্যপূর্ণ এক নির্মোহতায় আক্রান্ত ডাক্তার বােরহানউদ্দিন- সমাজের রােগগ্রস্ত মানুষ সম্পর্কে তার ধারনা-বিশ্বাস, মানুষের নদীর কান্না শােনা প্রভৃতি বিষয় যে শুধু এক নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়েছে তা নয় এ সব এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করে তাতে অভিনব মাত্রা দেওয়া হয়েছে।