“রাফখাতা” বইয়ের ভূমিকা:
২০১৩ সালে কিডনি রােগ ধরা পড়ে এফএসজিএস’ রােগটির নাম। ইউরিন দিয়ে প্রােটিন আর অ্যালবুমিন বেরিয়ে যায়। দেশের সব বড় ডাক্তারকে দিয়েই চিকিৎসা করানাে হলাে। সবারই সিদ্ধান্ত, ‘আজীবন স্টেরয়েড ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। পরামর্শমতাে চলতেও থাকলাম। অথচ সাইড ইফেক্টে শরীর ফুলে গেল, পানি এলাে, লিভারেও ইফেক্ট পড়ল, গায়ে দাগ পড়তে লাগল, হিমােগ্লোবিন কমে গিয়ে একবার হসপিটালাইজডও হলাম। তবে সব থেকে ক্ষতিকর যা হলাে, তাতে প্রথমে ব্লাড প্রেশার বেড়ে গেল, এরপর সুগার। ওষুধও খেতে থাকলাম শরীর টিকিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু হঠাৎ করে গত বছর ডান চোখটা স্ট্রোক করে বসল ব্লাড প্রেশার আর সুগার বাড়ার জন্য। রেটিনােপ্যাথির রােগী হয়ে এক চোখ হারালাম। বাবা সব সময় বলতেন, সবাইকে এক চোখে দেখবে। আমি সবাইকে এক চোখে দেখতে লাগলাম। শরীর খারাপের ফল মনেও পড়ে। মনে মনে আস্তে আস্তে ভেঙে পড়লাম। ধীরে ধীরে শরীরের যে অবস্থা, তাতে ডাক্তাররা বলতে লাগলেন, ‘কয়েক বছরের মাঝেই পুরাে শরীরের বিভিন্ন অংশ নষ্ট হয়ে যাবে। ফলস্বরূপ অস্ট্রিওপােরেসিস হয়ে ডান পা, বাম পা-র হাড় ক্ষয়ে গেল। কিছুদিন পরে বাম চোখটিও স্ট্রোক করল। আমি বুঝতে পারলাম আমি এই পৃথিবীতে একটা রাফখাতা’ হয়ে যাচ্ছি। যার প্রথমে সুন্দর মলাটে সফেদ সাদা কাগজ দিয়ে তৈরি থাকে, প্রয়ােজনে, সেখানে কালি দিয়ে নানান কিছু লেখা হয়। প্রয়ােজন শেষে পৃষ্ঠাগুলাে ছিড়ে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে দেয়া হয়। আমিও আস্তে আস্তে দুমড়ে-মুচড়ে শেষ পরিণতির দিকে যাচ্ছি।