আলো আঁধারে বাংলাদেশের পর্যটন বইয়ের ফ্লাপে লেখা কথা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প প্রতিনিয়ত আলাে-আঁধারের দোলাচলে দুলছে। অসম্ভব সম্ভাবনা থাকার পরেও শুধুমাত্র সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে আমাদের পর্যটন শিল্প তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না। ফলে প্রতি বছর আমরা বঞ্চিত হচ্ছি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে। অথচ বর্তমান বিশ্বে পর্যটন হচ্ছে একক বৃহত্তম কর্মসংস্থান ভিত্তিক শিল্প । সারা পৃথিবীর মােট জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ এককভাবে সংগৃহীত হয় এই পর্যটন শিল্প থেকে—যা অন্য যে কোনাে শিল্পের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। তারপরও আমাদের এই হতাশাজনক অবস্থান নিঃসন্দেহে কষ্টের। এ কষ্টের পরিমাণ আমাদের মতাে বেসরকারি পর্যটন সংস্থার আরও বেশি । আমরা না পারছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বােঝাতে, না পারছি বদল করতে। ফলে আমাদের অবস্থাও অনেকটা দেশের পর্যটন শিল্পের মতােই । এই বইয়ের প্রায় সব লেখাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখা। হয়তাে এভাবেই একটা সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুনজর পড়বে আমাদের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের ওপর—সেই স্বপ্ন নিয়েই এই বইয়ের সৃষ্টি।
তৃতীয় সংস্করণ প্রসঙ্গে আলাে আঁধারে বাংলাদেশের পর্যটন-বইয়ের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে-এটি আমার জন্য আনন্দের । ২০০৬ এবং ২০০৯ সালে বইটির যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের সময় দেশে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড’ গঠিত হয়নি। কিন্তু ২০১০ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বাের্ড গঠনের পর দেশের পর্যটন কার্যক্রমে বেশ গতি এসেছে সেটিও আমার জন্য বেশ আনন্দের। কারণ, ২০০৬ সালেই আকাংখা করেছিলাম এমন একটি বাের্ড গঠনের বিষয়ে। পর্যটন বিষয়ে বর্তমানে সরকারি মহলে বেশ তােড়জোড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১৬ সালকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই VISIT BANGLADESH YEAR ঘােষণা করেছেন। ফলে পর্যটন শিল্পে বেশ গতি আসবে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা। যদিও বেসরকারি খাতে খুব বেশী অগ্রগতি হয়েছে এমনটা বলার মতাে সময় বােধকরি এখনও হয়নি। তার ওপরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিদেশী হত্যা এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনাও আমাদের পর্যটন শিল্পে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তারপরেও সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প নতুন বছরে সব কিছু ঝেড়ে-মুছে নতুন অবয়বে উঠে দাঁড়াবে-এমনটা প্রত্যাশা করাই যায়। প্রকাশক আনােয়ার ফরিদীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশের প্রাক্কালে অভিনন্দন জানাই, ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সবাইকে আমার অসীম কৃতজ্ঞতা।
-তৌফিক রহমান