“সমাজচিত্রে ভারতীয় রেল” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
ভারতীয় রেলের ইতিহাসের সঙ্গে সমাজ-জীবনের ইতিহাস ওতপ্রােত ভাবে জড়িত। সূচনাকাল থেকেই রেল চক্রের ঘূর্ণনের সঙ্গে আবর্তিত হয়ে চলেছে সমাজের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক নানান কর্মকাণ্ডের বিবিধ গতি-প্রকৃতি। রেল ছাড়া জীবনকে ভাবাই যায় না। সত্যি বলতে, রেলই আধুনিক ভারতের রূপকার।
জনজীবনে রেলের বৈপ্লবিক প্রভাব জানতে গেলে রেলের ইতিহাসও জানা দরকার। এই জানা নিছক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে রেলের বিবর্তনের ইতিহাস জানা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সারা দেশের ইতিহাস- চলমান ট্রেনের সঙ্গে প্রবাহমান জীবনের বাঙ্গয় ইতিহাসের যােগ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, ডিব্ৰুগড় থেকে দ্বারকা, এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তের মানুষের এবং স্থানের যােগসূত্র। রচনাকারী ভারতীয় রেল জাতীয় সংহতির প্রতীক ইস্পাতবত্ম যা গােটা দেশকে জুড়ে দিয়েছে।
সে-কাল এ-কালের সাহিত্য, সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্র থেকে সংগৃহীত, নানান তথ্য সম্ভারে সমৃদ্ধ। এ বই পড়তে পড়তে পাঠক নিজেকে অনুভব করেন, তিনি যেন বসে আছেন চলন্ত ট্রেনের খােলা জানালার ধারে— তার চোখের সামনে সিনেমার পর্দার মতাে সরে সরে যাচ্ছে আসমুদ্রহিমাচল বৈচিত্র্যময় ভারতের নানান দেশের নানান দৃশ্য রেলগাড়ির আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনিত হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া অতীতের কাহিনি। কানে কানে যেন বলছে ‘কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও?