মিয়রঞ্জন সেন ও হরেন্দ্রমােহন দাশগুপ্তের ইংরিজি ভাষায় লেখা বাংলা সাহিত্যে পাশ্চাত্য প্রভাববিশ্লেষণের ঐতিহ্যসূত্রেই বাংলায় লেখা ‘বাংলা কাব্যে পাশ্চাত্য প্রভাব’ প্রভাববিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বাংলা সমালােচনা সাহিত্যে গত চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে ধ্রুপদী মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। অনুবাদ-অনুসরণের পাশাপাশি প্রভাব যে কোনাে সময়ে স্রষ্টার মর্মে গিয়ে অনুরণন তােলে তা বলা খুবই কঠিন। যথাসম্ভব বাহ্যিক ও অন্তর্লীন প্রমাণ দিয়ে সমালােচক সেই কঠিন কাজটাই দুঃসাহসের সঙ্গে করেছেন। একই সঙ্গে তুলনামূলক ও অন্তদৃষ্টিময় এই আলােচনায় উনিশ শতকের পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রাথমিক সংঘাত থেকে শুরু করে ঈশ্বর গুপ্ত, রঙ্গলাল, মাইকেল, হেম-নবীন, বিহারীলাল, সুরেন্দ্রনাথ। মজুমদার, দেবেন্দ্রনাথ সেন, অক্ষয়কুমার বড়াল, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, কামিনী রায়, রবীন্দ্রনাথ ও পরবর্তী কটি গােষ্ঠীর বহু সংস্কৃতিময় কাব্যরূপ-চেতনা আলােচিত হয়ে উঠেছে। প্রভাব তাে শুধু সাদৃশ্যে নেই, উত্তরণেই তার সার্থকতা, কিংবা হয়তাে অতিক্রমেই তরে স্বাতন্ত্র। এই গভীর সত্যটিই এই সুদীর্ঘ সংবেদনশীল আলােচনায় পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে।