হালকা হাসি চোখের জলে যিনি বাঙালিকে অনায়াসে কখনো কাঁদান, কখনো বা হাসান, তাঁর কলম থেকে যখন বেরিয়ে আসে একের পর এক প্রেমের গল্প, তখন সে-প্রেমের স্বাদও কিছুটা অম্ল-মধুর হয় বই কী। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বাঙালি মধ্যবিত্ত জীবনের যাবতীয় বৈপরীত্য ও ভণ্ডামির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য, সবচেয়ে সরল ভাষ্যকারদের একজন। তাঁর মতো আর কে লিখতে পারে, ‘বিনয় বিয়ে করে তিনটে বাঁশ পেয়েছে। একটা জ্যান্ত। সেটি হল তার বউ। অন্য দুটি হল ঘড়ি আর লেপ….’? শুধু ‘লেপ’ গল্পেই নয়, ‘সরেষ’, ‘সুন্দরী লেন’, ‘পেয়ালা পিরিচি’, ‘ফুল আর হুল’-সহ এ সংকলনের প্রায় প্রতিটি গল্পেই তাঁর এই তির্যক বঙ্কিম পর্যবেক্ষণের ধারা অব্যাহত। প্রেমকে সঞ্জীব বিনাপ্রশ্নে, বিনাসংশয়ে মেনে নিতে অপ্রস্তুত। কিন্তু তিনি প্রেম কিংবা প্রেমের মাধুর্যে অবিশ্বাসী নন। বরং তাঁর লেখায় উন্মোচিত হয় নানা প্রেমের নানান চিত্রপট। দাম্পত্য প্রেম তো বটেই, পাড়ার ছোকরা মাস্তানের প্রেম, ব্যাচেলর ছেলের অপূর্ণ প্রেম, মধ্যবিত্তের অবৈধ প্রেম, নাগরিক ক্লান্তিতে অক্লান্ত প্রেম_এরকম বিচিত্র প্রেমের বিরল সমাহার ঘটেছে এ সংকলনের পাঞ্চাশটি গল্পে।