পনেরাে বছর ধরে বুড়ি বার্টা তার বাড়ির সদর দরজার বাইরে বসে থাকে। ভিসকোস শহরের সবাই জানে, বয়স্ক লােকেরা এভাবেই তাদের সময় কাটায়। বসে বসে ঝিমায় আর স্বপ্ন দেখে ফেলে আসা স্বর্ণালী যৌবনের। তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে এমন এক দুনিয়াকে, যেখানে না তাদের কোন দরকার আছে, আর আছে তাদের কোন অবস্থান। মাঝে মাঝে তারা খোঁজে কেবল সঙ্গ, প্রতিবেশীর ব্যাপারে গল্প করতে চায়। ‘বার্টার অবশ্য এভাবে বসে থাকার পেছনে একটা বিশেষ কারণ আছে। গুরুত্বপূর্ণ সেই সকালটায় ওর অপেক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটল। বুড়ি মহিলা দেখতে পেল, খাড়া পাহাড়ের পথ বেয়ে উঠে আসছে এক আগন্তুক। এগােচ্ছে গ্রামের একমাত্র হােটেলটার দিকে। যেমনটা ভেবেছিল, তার সাথে এক বিন্দু মিল নেই আগন্তুকের। পরনের কাপড়গুলাে জীর্ণ, চুল দৃষ্টিকটু রকমের দীর্ঘ, গালে না কামানাে দাঁড়ি। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে শয়তানকে ‘ঠিক বলেছিল আমার স্বামী,’ আপনমনে বলল বার্টা। ‘আমি এখানে বসে না থাকলে কেউ ব্যাপারটা টের পর্যন্ত পেত না।’ মানুষজনের বয়স আঁচ করার ব্যাপারে বার্টা একদম যাচ্ছে তাই। আন্দাজে লােকটার বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মাঝে ধরে নিল সে। ‘একদম পিচ্চি। বুড়ােদের বয়সের হিসাব আর সমাজের বয়সের হিসাবে পার্থক্য আছে, বার্টার এই মন্তব্য তারই প্রমাণ। কততক্ষণ থাকবে আগন্তুক? মনে মনে ভাবল সে। হয়তাে অল্প কয়েকদিন, কেননা পিঠে কেবল একটা ছােট র্যাকস্যাক দেখতে পাচ্ছে বুড়ি। হয়তােবা রাতটা এখানে কাটিয়েই চলে যাবে অজানার উদ্দেশ্যে।