“অনলাইন জীবন ও অন্যান্য” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
বিজ্ঞানী মাদাম কুরি যখন তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণা। করেছেন তখন তিনি এই বিচিত্র রহস্যময় বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াটার ভয়াবহতার দিকটুকু জানতেন না। ল্যাবরটরিতে তিনি দিনের পর দিন তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করেছেন এবং নিজের অজান্তে অদৃশ্য তেজস্ক্রিয়তার রশ্মি তার। শরীরকে বিষাক্ত করে তুলেছে, তিনি শেষ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন সেই তেজস্ক্রিয় রশির কারণে। আমার বর্তমান যুগের ইন্টারনেট কিংবা ফেসবুক আসক্তি দেখে এই তেজস্ক্রিয়তার কথা মনে হয়। আমরা যখন এর সুযােগ-সুবিধা, বৈচিত্র্য এবং বিনােদনে সম্মােহিত হচ্ছি ঠিক তখন অদৃশ্য তেজস্ক্রিয় রশ্মির মতাে কিছু একটা আমাদের ভেতরে গুরুতর পরিবর্তন করে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও আমরা অনেক বেশি মনােযােগী ছাত্রছাত্রী পেতাম। এখন তাদের মনােযােগ কেন কমে যাচ্ছে? ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, ফেসবুকের কি এখানে প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে? আজ থেকে দশ বছর পরে হয়তাে আমরা জানতে পারব শৈশব-কৈশােরে মাঠে-ঘাটে ছােটাছুটি করে খেলাধূলা না করে দিনের পর দিন রাতের পর রাত ছােট একটা স্ক্রিনের সামনে বসে থাকার কারণে আমাদের কী ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। তখন হয়তাে অনেক দেরি হয়ে যাবে, আমাদের। কিছু করার থাকবে না। কিন্তু এই মুহূর্তে একটুখানি কমনসেন্স হয়তাে আমাদের অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে।