“ইবিকাসের বংশধর” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
স্বকৃত নােমানের গল্প বাংলাদেশের গল্প। এক একটি গল্প বাংলাদেশের হৃদয়কে ছুঁয়েছে। গ্রাম, নদী, বাওড়, দিঘি, গাছগাছালি, বন-বাদাড়, বান-বন্যা, অনাবৃষ্টি নিয়ে বাস করা দরিদ্র মানুষের জীবনের রূপকার স্বকৃত। নিম্নবর্গের মানুষ স্বকৃত নােমানের গল্পের মানুষ। তাদের কথা লিখতে লিখতে স্বকৃত যেন বাংলাদেশের আত্মাকে দেখিয়ে দেন। তার গল্পের মানুষ ক্ষুধার্ত বাংলার মানুষ। সমস্ত জীবন কাটায় যেন ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য। স্বকৃতর গল্পের মানুষ ভাত আর মাংসের কথা ভাবে। স্বপ্ন দেখে। তবুও তাদের এক জীবন-দর্শন আছে। তা তাদের জীবন এবং জন্ম থেকে উপলব্ধ। জীবন আর ধর্মের নিগড় দুই যে মেলে না তা স্বকৃতর গল্প আমাদের দেখিয়ে দেয়। এই গ্রন্থে আছে যে ক্ষিদরের গল্প (বাঙাল), তা আমাদের সাহিত্যের সম্পদ। কী অনায়াসে ক্ষিদর অগ্রাহ্য করে বড়হুজুর, মােল্লার ফতােয়া, সতর্কতা। নদীর ওপারে মৌলবি যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে, তা নদীর ওপারেই রেখে আসে ক্ষিদর। তাকে খেটে খেতে হয়। তার নিজস্ব জীবনে অনধিকার প্রবেশ করা সহজ নয়। স্বকৃত নােমানের লেখায় যে দার্শনিকতা আছে, তাইই তাকে বিশিষ্ট করেছে। ঔপন্যাসিক স্বকৃতর গল্পের অনুরাগী হয়ে থাকা যায় না। প্রতিটি গল্প চিনিয়ে দেয় অবারিত এক বাংলাদেশ এবং তার মানুষজনকে।