“স্বাধীনদেশে ঔপনিবেশিক বিচার ব্যবস্থা” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
স্বাধীন দেশে ঔপনিবেশিক বিচার ব্যবস্থা বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখার একটি উদ্যোগ। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার। গণবিচ্ছিন্ন কিংবা গণস্বার্থবিরােধী হিসেবে উদ্ঘাটন বহুদিক থেকেই হয়েছে। কিন্তু রাহমান চৌধুরী আর এক ধাপ এগিয়ে একে পুরনাে শাসনগুলােরই ধারাবাহিকতা ‘ হিসেবে দেখেছেন। প্রাকবৃটিশ সময়ের বিচার ও প্রশাসন ব্যবস্থার মাঝে তুলনামূলক আলােচনা করে লেখক উপনিবেশিক বাণিজ্য, ভূমি বন্দোবস্ত, লুণ্ঠনের। _ শাসন টিকিয়ে রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক দমনের প্রয়ােজনীয়তার সাথে। সম্পর্কিতভাবেই বৃটিশ আমলের নতুন বিচার ব্যবস্থার উদ্ভবকে হাজির করেছেন। বৃটিশ শাসন পরবর্তী সময়েও এই ধারাই কিভাবে অব্যাহত ছিল, তার চরিত্রও তিনি উদঘাটন করেছেন। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার। পরও বিচার বিভাগ কিভাবে রাষ্ট্রের আর সকল অঙ্গের মতই গণবিচ্ছিন্ন। ও ক্ষমতাবানের পৃষ্ঠপােষক হিসেবেই রয়ে গিয়েছে, সেই আলােচনাও ‘ এই গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে।
স্বাধীন দেশে ঔপনিবেশিক বিচার ব্যবস্থা চরিত্রের দিক থেকে গবেষণাধর্মী এবং সুপাঠ্য। বিখ্যাত সব বিচারিক মামলা ও ঘটনার সাথে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থার। সম্পর্ক তিনি যেমন দেখিয়েছেন, তেমনি হতদরিদ্র কৃষক ও কারিগরও কিভাবে এই বিচার ব্যবস্থার নিগড়ে বাঁধা পড়েছিলেন, তাও তার মনােযােগে থেকেছে। বাংলাদেশ আমলে অজস্র দৃষ্টান্ত হাজির করে সর্বশেষতম উদাহরণসহ আমাদের। চেনা ইতিহাসকে রাহমান চৌধুরী পাঠকের কাছে নতুন একটি আয়নায় প্রতিফলিত করেছেন। শুধু আইন ও বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে উৎসুক বিশেষজ্ঞরা নন, প্রতিটি সচেতন নাগরিকই বইটি থেকে ভাবনার অজস্র খােরাক পাবেন।