থাকিতেন কোথায়, ইহাদিগকে পাইতাম কোথায়, বঙ্কিম যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া না রাখিতেন? বঙ্কিমের আজন্ম সাধনার ফল ইহারা। বঙ্কিমচন্দ্র জাতি বলিতে যাহা বুঝিয়াছিলেন, মুসলমান তাহা হইতে বিচ্ছিন্ন ছিল না। তিনি তাহার জাতির সংজ্ঞায় মুসলমানকেও পর্যায়ভুক্ত করিয়াছিলেন বঙ্গজননীর সপ্তকোটী সন্তানকেই তিনি স্বাধীনতার সংগ্রামে আহ্বান করিয়াছিলেন। সুতরাং বঙ্কিমচন্দ্রকে মুসলিম-বিদ্বেষী মনে করিয়া তাহার প্রকৃত দানের মর্যাদা ভুলিলে চলিবে না।.. তাঁহাকে মুসলমানের বন্ধু বলিয়াই অভিনন্দন জানাইতেছি।” (৪০ পৃষ্ঠা)। বঙ্কিম যদি মুসলমান সমাজকে (শুধু দুষ্ট নাট্য চরিত্রকে নহে) ঘৃণা করিতেন, তবে নবাব আবদুল লতীফ খাঁ বাহাদুর, Mohamedan Literary Society-র প্রবর্তক এবং কলিকাতার শিক্ষিত মুসলমান সমাজের (আমীর আলীর পূর্বে) কি করিয়া তাহার আজীবন বন্ধু এবং সহচর হইতে পারিলেন?বাঙ্গলায় কৃষকগণের মধ্যে মুসলমান ধর্মাবলম্বী শতকরা ৭০ হইবে। এই কৃষক সমাজের ভালর জন্য বঙ্কিম যে লেখনী-যুদ্ধ চালাইয়াছিলেন, তাহা অনেকেই জানেন না। ৪১-৪৫ পৃষ্ঠা পড়ুন। ‘আনন্দমঠ’ না পড়িয়াই ইহাকে মুসলমান-বিদ্বেষের বিষবৃক্ষ বলিয়া যাহারা চেঁচান, তাহাদের কেহ কি ৪৬-৫২ পৃষ্ঠা পড়িবেন, যুক্তি শুনিবেন, সত্য গ্রহণ করিবেন? “ ‘আনন্দমঠ’ শুধু আনন্দ দেয় নাই, দিয়াছে প্রাণ, দিয়াছে উৎসাহ, …প্রাণে জাগাইয়া দিয়াছে দেশাত্মবােধের মহান আদর্শ।