“বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ” বইটির ভুমিকা থেকে নেয়াঃ
বিভিন্ন সময় লেখা বারােটি প্রবন্ধ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইটি প্রকাশিত হলাে। এ বইয়ের অধিকাংশ প্রবন্ধ বিভিন্ন দৈনিক, সাময়িকী ও সংকলনের বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশের জন্য লেখা। তবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রবন্ধ। যথা—বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণ : একটি অনুপুঙ্খ পাঠ’ যথাক্রমে কলকাতা ও ঢাকার দুটি বিশেষ সেমিনারে পঠিত। ২০০৫-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে কলকাতার দুটি সংগঠন ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে কলকাতা বাংলা আকাদেমির জীবনানন্দ সভাকক্ষে আয়ােজিত সভায় উপস্থাপিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক, পাকিস্তান প্রস্তাব ও ফজলুল হক’ গ্রন্থের লেখক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ‘গুরু নানক অধ্যাপক শ্রী অমলেন্দু দে। আর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ ১৯৭১-এর ঐতিহাসিক ভাষণের ওপর নিবিড় বিশ্লেষণমূলক লেখাটি ২০০৪-এ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর আয়ােজিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভায় পঠিত হয়।
ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ও তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরােধীদলীয় নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান বইয়ের অন্য দশটি প্রবন্ধ বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও রাজনীতিকে আমি যেভাবে বুঝি তার নিরিখে, বঙ্গবন্ধু ও তার রাষ্ট্রচিন্তার ওপর আলােকসম্পাতে ঋদ্ধ। সেই সঙ্গে পরবর্তী কোনাে কোনাে শাসক যে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রনীতি পাল্টে ফেলে বর্তমান বাংলাদেশকে তার ধারাবাহিক ঐতিহাসিক সগ্রাম ও লাখ লাখ মানুষের জীবন দানের গৌরবদীপ্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রসত্তা থেকে বিচ্যুত করে মডারেট মুসলিম বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার চক্রান্ত চালিয়েছে তার ওপরও তীব্র আলােকপাতের প্রয়াস পেয়েছি। প্রবন্ধগুলােতে আমার মৌলিক ও স্বকীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। আশা করা যায় যুক্তিবাদী ও ইতিহাসনিষ্ঠ বাঙালি পাঠককে এ বই সন্তুষ্ট করতে পারবে।