“বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ার এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা শেখ লুত্যর রহমান এবং মা সায়রা খাতুন। তাঁর ডাক নাম ‘খােকা। স্কুলে ছােট-বড় সকলেই তাঁকে ‘মিয়াভাই’ বলে ডাকতাে। কিশাের শেখ মুজিব নিপীড়িত, নির্যাতিত, শােষিত, বঞ্চিত বাঙালির পাশে থেকে পরিণত হয়েছেন একজন ছাত্রনেতা থেকে প্রাদেশিক নেতা। প্রাদেশিক নেতা থেকে জাতীয় নেতা। জাতীয় নেতা থেকে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির জনক। কালজয়ী মহাপুরুষ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির অধিকার এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রাখেন। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৮-এর সামরিক শাসন-বিরােধী আন্দোলন, ‘৬২-এর শিক্ষা-সাংস্কৃতিক আন্দোলন, ‘৬৬-এর ৬-দফা, ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ‘৭০-এর নির্বাচনসহ এদেশের সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি এই জাতিকে নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাঁকে বার বার কারাবরণসহ অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। সকল প্রকার অত্যাচার, শােষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, ..প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তােলা এবং তােমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরাে দেবাে- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বাে, ইরশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের এই ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেসকো ঘােষিত পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। আমরা মনে করি, এমন একদিন আসবে যেদিন এই ভাষণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে পৃথিবীর ইতিহাসে।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাহস, বাগ্মিতা এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এদেশের সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করে।