‘হিপ্পি’ পাওলো কোয়েলহোর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। বিচিত্র এক প্রজন্মের স্বপ্নকে পাঠকের চোখের সামনে নিয়ে এসেছেন লেখক; সমাজের সেই ব্যতিক্রমী প্রজন্ম, যারা শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেছে নিয়েছিল নতুন এক জীবনধারা। প্রতিষ্ঠিত সামাজিক রীতিনীত, কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি, রক্ষণশীলরা, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি-সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যারা হয়েছিল ঘরছাড়া। সত্তরের দশকে বিশ্বজুড়ে আবির্ভূত হতে শুরু করেছিল হিপ্পিরা। আমস্টারডামের ড্যাম স্কয়ারে সেই লম্বা চুলঅলা, রঙচঙে পোশাক পরিহিত তরুণের দল, ধূপ জ্বালিয়ে যারা মন্থর চিত্তে সুর তুলতো গানের; মেতে উঠতো অবাধ যৌনতায়, অনুসন্ধানে লিপ্ত হতো আড়ালে চাপা পড়ে থাকা সত্যের দিশায়। পূর্বপুরুষের পরিচিত কাঠামোবদ্ধ, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে অস্বীকার করেছিল এই প্রজন্ম। অন্যদের ওপর নিজের বিশ্বাস না চাপিয়ে নিজেদের জীবনধারা ও যুক্তি দিয়ে পৃথিবীকে বদলাতে চেয়েছিল। সেই সময়ের কথা- চর্মসার, দীর্ঘকেশী ব্রাজিলিয়ান যুবক পাওলো তখন লেখক হবার স্বপ্নে বিভোর। স্বাধীনতার সন্ধানে, জীবনের গভীর অর্থকে উপলব্ধি করতে বান্ধবীকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে। যাত্রার শুরু হয় বিখ্যাত ‘ডেথ ট্রেন টু বলিভিয়া’ থেকে। পেরু আর চিলি পেরিয়ে আর্জেন্টিনায় পৌছে সমাপ্তি ঘটে সবকিছুর। আমস্টারডামের বিখ্যাত স্কয়ারে এসে পাওলোর জীবন বদলে যায়, দেখা হয় বিশ বছরের ডাচ তরুণী কার্লার সাথে। জাদুর গাড়িতে চড়ে ওরা একসাথে পাড়ি জমায় ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার পথ পেরিয়েকাঠমুন্ডুর উদ্দেশ্যে। অদ্ভুত একদল সঙ্গী নীয়ে যাত্রা শুরু হয়, যাদের প্রত্যেকের জীবনের আলাদা আলাদা গল্প আছে। একসাথে ভ্রমণ করার সময়, পাওলো এবং কার্লা নিত্যদিন ওদের সম্পর্কের নতুন নতুন দিক আবিষ্কার করে। সেই অভিজ্ঞতা আর সিদ্ধান্তগুলোর ওপর নির্ভর করেই অঙ্গিত হয় ভবিষ্যতের মানচিত্র!