দিওয়ান-ই-শামস-ই-তাবরিজ:বইয়ের ভূমিকা অধ্যাপক রেনল্ড নিকলসন সম্পাদিত ও ভাষান্তরিত ‘দিওয়ান ই শামস্ ই তাবরিজ’ গ্রন্থটি সুহৃদ জুনায়েদ ১৯৭৭ সালে লন্ডনে সংগ্রহ করেন । তাঁর সমৃদ্ধ সুঠি সাহিত্য সংগ্রহের মধ্যে এই বইটির আমি খোঁজ পাই। প্রথম থেকেই বইটিকে সমকালীন বাঙালী পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করতে আমি প্রলুব্ধ ও তাড়িত হই। কারণ প্রকৃতভাবে সুফিবাদ বাংলাদেশে উপস্থাপিত হচ্ছে না, আমরা কেবল এর বিকৃত রূপের সঙ্গে পরিচিত । এটিকে ভাষান্তর করার জন্য অনেকের কাছে বিফলে ঘোরাফেরা করার পর মৌলানা আ.না.ম. মাকছুদ আলী, প্রবীর চন্দ, দিলরুবা মিজু, মারুফা বেগম এবং হাবিবুল ইসলাম বাবুলকে সেটি সমার্জিত করতে দিই। তাঁদের মূল্যবান অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। ভূমিকার কবিতাটি প্রবীর চন্দ কর্তৃক আনুপূর্বিক রূপান্তরিত। বইটি মুদ্রণের সকল পর্যায়ে হাবিবুল ইসলাম বাবুলের সহযোগিতা পাই সবচাইতে বেশি। প্রকাশক সৈয়দ ফয়েজুর রহমান ও সৈয়দ রহমত উল্লাহরও ধন্যবাদ প্রাপ্য।
কবিতাগুলো অনুবাদ জুন ১৯৯৭ সালের দিকেই শেষ হয়ে যায়। তারপর গ্রন্থটি কম্পোজ শুরু হয়। কিন্তু অভাবনীয়ভাবে এই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ইতিমধ্যে শাহবাজী সিলসিলার গদিনশিন সৈয়দ হোসেন শাহবাজী ৯ আগস্ট ১৯৯৭ আমাকে The Way of passion গ্রন্থটি দেন। আমি চমৎকৃত হয়ে লক্ষ করি যে, বইটি প্রথম পরিচ্ছেদ সুন্দর একটি ভূমিকা হিসেবে কাব্যগ্রন্থটিতে সংযোজিত হতে পারে। পাঠকেরাও হয়তো স্বীকার করবেন যে, কাব্যগ্রন্থটির একটি প্রেক্ষিত এন্ড্রু হার্ভের উদ্ধৃতি দ্বারা সৃষ্ট হয়েছে।
অধ্যাপক নিকলসন বলেছেন, রুমীর কবিতার রস গ্রহণ করতে হলে আখ্যান, কথোপকথন , ধর্মবিষয়ক বক্তব্য, কোরানের অংশ এবং দার্শনিক তত্ত্ব অতিক্রম করতে হবে। কাব্যের ভাষান্তর করা প্রকৃত অর্থে সম্ভব নয়। দেশকাল ও ভাষার ব্যবধান অতিক্রম করে সম্পূর্ণ নতুন এক পাঠকশ্রেণীর কাছে রুমীকে তুলে ধরার প্রচেষ্টা একপ্রকার ধৃষ্টতা। তবে হার্ভে বলেছেন, বর্তমানকালে রুমীকে জানা খুবই প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য পরের পরিচ্ছেদে দ্রষ্টব্য।
পুনরায় উল্লেখ করছি, আমি কবি নই। তবুও যাঁর কৃপায় পঙ্গও গিরিলঙ্ঘন করে তাঁর উপরর ভরসা করেই আমি এই দুরূহ কাজে হাত দিয়েছিলাম। যদি কিছুটাও সফল হয়ে থাকি সেটা তাঁরই কৃপা।
রুমীর অন্যতম এই কাব্য-সংকলন ভাষান্তরের মাধ্যমে ইরানের গোলাপবাগানের ঘ্রাণ যদি বাংলার সুমিষ্ট ইক্ষুক্ষেত্রে ভেসে আসে তবেই আমাদের সার্থকতা।
সৈয়দ খলিলউল্লাহ