বই পরিচিতি: মেঝে রক্তে মাখামাখি। দু-দুটো লাশ পড়ে আছে। দুজনকেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। একটি ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছে চুনু। এক হাতে ছুরি এবং আরেক হাতে জাপটে ধরে আছে এক বস্ত্রহীন মেয়েকে। কোনো হাতের দিকেই এই মুহূর্তে চুনুর খেয়াল নেই। সে চিন্তায় আছে লাশ দুটো নিয়ে। চিন্তার কারণটি বেশ অদ্ভুত। দুটো লাশই দেখতে হুবহু তার মতো! তিনজনের একই চেহারা নিয়ে চুনু যখন বিভ্রান্ত, ঠিক তখনই ঘটল ভয়াল আরেক ঘটনা। বিশাল হাতুড়ি হাতে ঘরটিতে ঢুকল চতুর্থজন। এমন বিকটদর্শন হাতুড়ি রাস্তাঘাটে লোহা বাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়। ভয়ংকর ব্যাপারটি শুধু হাতুড়ি না; যে লোকটি ঢুকল এইমাত্র, সেও দেখতে চুনুর মতো!
ভূমিকা (লেখকের কথা): আজ কনকনে শীত। হাত বের করলেই মনে হচ্ছে, ভেতরের রক্ত জমে যাচ্ছে! অস্ফুট বরফ পড়ছে ইংলিশ চ্যানেল তীরবর্তী ব্রাইটন শহরে। এখানে কাকডাকা ভোর নেই; আছে শঙ্খচিল ডাকা ভোর। শীতের চাবুকের আঘাতে গাছগুলোতে একটি পাতাও নেই; সঙ্গে শঙ্খচিলের আর্তনাদের কারণে ভোরবেলায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এই এলাকাটিকে মনে হচ্ছে ভুতুড়ে। যে বাসে করে ভার্সিটিতে এলাম, সেটিতে ছিলাম আমি একা। উদ্দেশ্য, লাইব্রেরিতে বসে লিখব। কয়েক তলাবিশিষ্ট বিশালায়তন লাইব্রেরিতে আমি একা। ‘সাইলেন্ট জোন’-এ বসে লিখছি ‘নিলীন’-এর শেষাংশ। লেখালেখির নিঃসঙ্গ এই যাত্রায় আমি পাশে পেয়েছি আপনাদের। এ ঋণ কখনো শোধ হওয়ায় নয়। অপরিমেয় কৃতজ্ঞতা।
ছেলেবেলায় পরীক্ষায় থাকত নামকরণের সার্থকতা। ‘নিলীন’ অর্থ বিলীন, লগ্ন, নিমগ্ন। এতসব অর্থ চিন্তা করে কাহিনি লিখিনি; তবে লেখার পর দেখি, তাৎপর্যপূর্ণ শব্দত্রয়ীকে অন্তরে ধারণ করছে সাইকো থ্রিলার ‘নিলীন’। আসল সার্থকতা বিচার করবেন পাঠকবন্ধুরা। আপনারা সন্তুষ্ট হলে, সাইকো থ্রিলার নিয়ে আবারও দেখা হবে।