“বুয়েটকাল” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
আজকের সমাদৃত নাট্যকার, লেখক ও স্থপতি শাকুর মজিদ প্রায় চার দশক আগে ফিরে গিয়ে দেখছেন সময়কে, একজন সদ্য কৈশোর-পেরুনো তরুণের যাপিত জীবনের মাঝ দিয়ে। আত্মজৈবনিক এই গ্রন্থ গত শতাব্দীর আশির দশকের ঢাকা নগরকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে। উঠে এসেছে সেই সময়ের রাজনীতি, সমাজব্যবস্থা, নগরজীবনের দৈনন্দিন হালচাল, শিক্ষাঙ্গনের ভেতর-বাহির, সংকট-সংগ্রাম ও প্রিয়-অপ্রিয় বিষয়-নির্ভর নিগূঢ় বাস্তবতা। ব্যস্ত মহানগরের বুকে স্থপতি হবার আকাক্সক্ষা নিয়ে আসা এই তরুণ, কখনো একা, কখনোবা সদলবলে বিচরণ করছেন, আহরণ করছেন চারপাশে ঘটে যাওয়া হাজারো ঘটনার নির্যাস। অনেকটাই আগন্তুক হয়ে প্রবেশ করে নগরজীবনের এই বিশাল পরিসরকে শাকুর মজিদ আলিঙ্গন করেছেন, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনাকে নিজ বাসভূম হিসেবে গ্রহণ করে ক্রমশ অতিক্রম করেছেন নানামুখী অভিজ্ঞতার অপার দুয়ার। একান্ত ব্যক্তিগত আনন্দ-বেদনা, দ্রোহ-সংকটকে সাথে করে যূথবদ্ধ জীবনকে পরিক্রম করেছেন, উদযাপন করেছেন সবান্ধবে, সম্মিলিতভাবে। অকপটে লিখে যাওয়া সংবেদনশীল এই তরুণের অভিজ্ঞতাই বুয়েটকাল। এর প্রতি পৃষ্ঠায় পাঠক খুঁজে পাবেন সেই জীবন পরিক্রমণের নির্মোহ অথচ প্রাণবন্ত, সাবলীল বর্ণনা। পারিপার্শ্বিকতার আলোকে-উত্তাপে, সাহচার্যে-পরিচর্যায়, দ্বন্দ-সংঘাতে কিংবা প্রেম-অভিমানে সিক্ত এই তরুণ ক্রমশ ঋদ্ধ, পরিশীলিত আর পরিণত হয়ে ওঠে। বৃহত্তর, পরিপূর্ণ জীবনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় নিজের অজান্তেই। আত্মস্মৃতিমুখর কথোপকথন, বুয়েটকাল পাঠককে ফিরিয়ে নেবে সেই সময়ে, যখন উপ্ত হয়েছিল কীর্তিমান শাকুর মজিদ-এর জাগরণ আর উত্তরণ-এর বীজ। অভিনন্দন, শাকুর মজিদ।