“দ্য আলকেমিস্ট” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
প্রাচীন ইউরােপ, আফ্রিকায় একদল রসায়নবিদ ছিলেন, যারা সাধারণ যেকোনাে ধাতুকে ক্রমাগত পুড়িয়ে মূল্যবান ধাতু সােনায় রূপান্তর করতে জানতেন। এঁদের অ্যালকেমিস্ট বলা হতাে। সােনা রূপান্তরের এই জ্ঞানকে তারা মানুষের রােগ নিরাময়ের কাজে ব্যবহার করতেন। বলা যায়, সাধারণ ধাতুকে ক্রমাগত পােড়াতে গিয়ে তাঁদের আত্মাও পরিশুদ্ধ হয়ে উঠত। মানুষের দেহ নশ্বর, কিন্তু তার আত্মা অবিনশ্বর। এই আত্মার বাস প্রতিটি মানুষের অন্তরে। যে মানুষ তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে পারে, সে শুনতে পায় স্রষ্টার বার্তা। সে হয়ে ওঠে আত্মবিশ্বাসী, পৃথিবীতে তার আগমনের উদ্দেশ্য কী সেটা সে বুঝতে পারে, ফলে সার্থকতায় ভরে ওঠে সেই মানুষের জীবন। দি অ্যালকেমিস্ট এমনই একটি প্রতীকধর্মী উপন্যাস। এ উপন্যাসে সান্তিয়াগাে নামের মেষপালক কিশােরটি তার স্বপ্নে দেখা গুপ্তধন খুঁজতে পাড়ি জমিয়েছে সাহারা মরুভূমিতে। তার গন্তব্য ইজিপ্টের পিরামিড। এই পিরামিডে পৌছতে কখনাে তাঁকে মােকাবিলা করতে হয়েছে মরুভূমির ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লিপ্ত উপজাতি যােদ্ধাদের, রাতের গভীর অন্ধকার, হিমশীতলতার সাথে, কখনাে ভিনদেশি ঠগ, জোচ্চোরদের পাল্লায় পড়ে হারাতে হয়েছে সবকিছু। তবে এক সময় সে রপ্ত করেছে প্রকৃতির ভাষা, শুনতে শিখেছে নিজের আত্মার ধ্বনি বা স্রষ্টার বার্তা। ফলে সে গুপ্তধন উদ্ধারে সফল হয়েছে। একজন অ্যালকেমিস্ট যিনি নিজে প্রকৃতির সাথে একাত্ম, তিনি জীবনের সঠিক পথে হাঁটতে সান্তিয়াগােকে সাহায্য করেছেন। সান্তিয়াগাে উপলব্ধি করেছে যে, ধর্ম, বর্ণ যাই হােক, সকল মানুষ আসলে এসেছে এক স্রষ্টার কাছ থেকেই। তার এই উপলব্ধি পরিণত হয়েছে বিশ্বজনীন ভালােবাসায়। ফলে স্পেনীয় এই কিশোের ভালােবেসেছে মরুবাসী নারী ফাতিমাকে।