‘উধাও’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ পুরান ঢাকার রহস্যময় এক বাড়ি। সেখানে থাকে বকুল নামের অনিন্দ্যসুন্দরী এক কিশোরী আর তার মানসিকভাবে অসুস্থ মা। বকুলের মধ্যবয়সী এক ফুফাতো ভাই তাদের তত্ত্বাবধান করে। সম্পদের লোভে সেই ভাই বিয়ে করতে চায় বকুলকে। এর মধ্যে রাস্তায় বকুলকে দেখে তার জন্য বিভোর হয়ে ওঠে এক চালচুলোহীন ছেলে বাদল। নানা অজুহাতে বকুলের জীবনে প্রবেশ করার চেষ্টা করে সে এবং বারবার ব্যর্থ হয়। কিন্তু বকুলকে ভুলতে পারে না কিছুতেই। ঘোর লাগা এক অদ্ভুত সময়ে হঠাৎ কিছু রহস্যময় মানুষ তাকে তুলে নিয়ে যায়। গুম করে রাখে কিছুদিন।
বাদল ফিরে এলে এ নিয়ে তাকে সাবধান করে বন্ধুরা। বাদলও বোঝে কিছু করার সামর্থ্য নেই তার। তবু সে ফিরে এসে জড়িয়ে পড়ে আরও বড় ঝামেলায়। খুন করার জন্য তাকে খুঁজে বেড়ায় স্থানীয় কমিশনারের গুন্ডারা। প্রাণভয়ে পালায় সে। কিন্তু বকুলের বিয়ের আয়োজনের সংবাদ শুনে ফিরে আসে। এটা কি সত্যি তার ফিরে আসা? নাকি গভীর ভালোবাসার এক জীবন থেকে চিরদিনের জন্য উধাও হয়ে যাওয়া?
আসিফ নজরুলের উধাও এক জীবনে বহু জীবন যাপনের কাহিনি।
‘অসমাপ্তির গল্প’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ সময়টা আন্দোলনের, বিপ্লবের, বড় কিছু ভাবার। কিন্তু মামুনের স্বপ্নটা সাদামাটা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার সঙ্গে পরিচয় হয় মেয়েটির। সে স্বপ্ন দেখে শুধু তাকে ভালোবাসার; তাকে ভালোবাসি বলতে পারার।
তার স্বপ্নপূরণের সুযোগ আসে বারবার। নির্জন ক্লাসরুমে, বৃষ্টিভেজা মাঠে, কয়েন বক্স টেলিফোনে। কিন্তু সে কখনো বলতে পারে না তার ভালোবাসার কথা।
সময় বদলায়। মামুনের জীবন হঠাৎ বদলে যায় এক অচিন্তনীয় ঘটনায়। চাইলেই সে এখন হারিয়ে যেতে পারে একান্ত এক ভুবনে। চাইলেই সে মেয়েটির কণ্ঠ শুনতে পারে, তার সজল চোখে চেয়ে থাকতে পারে, তার দিঘল চুলে আঙুল ছোঁয়াতে পারে। ঘন কণ্ঠে বলতে পারে, ভালোবাসি। মামুন হয়তো বলেও তা। তবু তার সবকিছু রয়ে যায় অসমাপ্ত!
আসিফ নজরুলের উপন্যাস অসমাপ্তির গল্প কোনো রূপকথা নয়। আমাদেরই চিরন্তন এক চেনা কাহিনি।
‘দ্বিতীয় দিনের কাহিনী’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ রাজীবের জীবন ছিল আর দশটা বেকার যুবকের মতো। পড়াশোনা শেষে ঢাকায় আশ্রয় খোঁজার বিড়ম্বনা, চাকরির জন্য বারবার ইন্টারভিউ দেওয়ার দুঃসহ অভিজ্ঞতা, মায়াময় একটি মেয়েকে ভালোবাসার আনন্দযাত্রা, তাকে বিয়ে করার কোমল স্বপ্নচারিতা। তার ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করে কোনোমতে এই শহরে টিকে থাকার চেষ্টা।
রাজীবের জীবনে ছিল নানান চমকপ্রদ মোহও। টিউশনির অল্পবয়স্ক ছাত্রী হঠাৎ কিছু ঘটনায় প্রবলভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে তার প্রতি। রাজীব তার প্রলোভনে সাড়া দিয়ে জীবনকে ভোগ করতে পারত। তার বড়লোক বন্ধুর অবমাননা সহ্য করে ভালো কোনো চাকরি জোটাতে পারত। পারত এমনকি ছাত্ররাজনীতির চোরাপথে জীবনের অঙ্ক মেলাতে। কিন্তু রাজীব তা করেনি। রাজীবের সমস্যা তার আত্মমর্যাদাবোধ। তার মতো বেকার যুবকদের হয়তো আত্মসম্মানবোধ থাকতে হয় না। কিন্তু রাজীবের এই বোধ ছিল গভীর। এটা নিয়েই সে বিজয়ী হতে চেয়েছে জীবনে। চাকরি খোঁজার যুদ্ধে, এক ভয়াবহ সাইকোপ্যাথের সঙ্গে দ্বন্দ্বে আর ভালোবাসার মেয়েটির সঙ্গে সংসার শুরুর দ্বিধায়। কিন্তু সেই মেয়েই তাকে ভুল বুঝলে তার সব বিশ্বাস টলে ওঠে হঠাৎ। এই উপন্যাস তবু তারই জয়ী হওয়ার অনবদ্য কাহিনি।