‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস’ বইটিতে লেখা ফ্ল্যাপের কথা: মানুষের অভিজ্ঞতার কেন্দ্রস্থলে দর্শনের অভিব্যক্তি সজ্ঞানে হোক, অজ্ঞানে হোক, মানবেগোষ্ঠীর প্রত্যেকটি বোধশক্তিমান ব্যক্তিই তাই দার্শনিক। কেন জন্ম হল, জীবনের উদ্দেশ্য কী, ঘটনাপ্রবাহের তাৎপর্য কী-এ সমস্ত প্রশ্ন মানুষ কোনদিনই এড়াতে পারে না । শুধু তাই নয়, দৃশ্যমান স্পর্শমান জগতের যে বিচিত্র প্রকাশ, তার মধ্যে অগণিত সঙ্গতি অসঙ্গতি প্রত্যেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সে সম্বন্ধে যেদিন মানুষ ভাবতে শুরু করল, সেদিনই দর্শনের গোড়াপত্তন। সে-চিন্তাধারাকে যদি সংহত ও সুসংবদ্ধ না করি, তবে আমাদের চিন্তায় বারে বারে ভুল হবে। সংহত ও সুসংবদ্ধ করবার চেষ্টা করলেও বহুক্ষেত্রে তবু ভুল হবে, কিন্তু এ-সমস্ত বিষয়ে চিন্তা না করে থাকাও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সৃষ্টির প্রথমদিন থেকেই মানুষ এসব বিষয়ে চিন্তা করেছে এবং তাই মানুষের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই দর্শনেরও আবির্ভাব।
জীবনের প্রতি ক্ষেত্রেই মানুষের ভাবনা মানুষের ক্রিয়াকার্যকে প্রভাবিত করে। দর্শনচিন্তা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সজাগ বা অবহিত না হলেও দেশকালের চিন্তাধারার প্রভাব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এড়াতে পারে না, তাই প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে মানুষের ইতিহাসে দর্শনের প্রভাব সুগভীর। বিভিন্ন যুগে, বিভিন্ন দেশে যে বিভিন্ন জীবনদর্শনের বিকাশ, বর্তমান যুগে মানুষের পক্ষে তার পরিচয় আরো প্রয়োজনীয়। বিজ্ঞান ও টেকনিকের অগ্রগতিতে…।