‘মঙ্গোল ও তাতার সাম্রাজ্যের ইতিহাস’ বইটিতে একদিকে তাতারদের উত্থান, ক্রমবিকাশ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে আবির্ভাব; অপর দিকে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর অবক্ষয়, অধঃপতন এবং সর্বশেষ তাদের চূড়ান্ত পরাজয়ের নেপথ্য কারণগুলো নিরপেক্ষভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
তাতারদের উত্থান ও মুসলমানদের পতন-পর্বে তাতারদের পরিচয়, প্রকৃত আবাসভূমি, জাতি গঠনের মূল উপাদান, ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি, চেঙ্গিস খানের আবির্ভাব, সেনা বাহিনীর প্রতি তার আদেশ-উপদেশ, সমরনীতি, রণকৌশল, গুপ্তচরবৃত্তি, জ্ঞানী ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ, মঙ্গোল সেনাপতিদের মানোত্তীর্ণ রণকৌশল অনুসরণ; অপর দিকে খাওয়ারিজম সাম্রাজ্য, আব্বাসি খিলাফাত এবং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের শাসকদের দুর্বলতা, সভ্যতার বিনির্মাণে তাদের ব্যর্থতা, শাসনব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের অনীহা ও অনাস্থা, শাসক-পরিবারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সামরিক দুর্বলতা, দুনিয়ার প্রতি মোহ ও মৃত্যুর প্রতি অনীহা, অনৈক্য ও বিচ্ছিন্নতা, জানসাধারণের উপর শাসকশ্রেণির অবিচার,
সুলতান মুহাম্মদ আলাউদ্দিন খাওয়ারিজমির অহংবোধ, মনস্তাত্ত্বিক পরাজয়, সুলতান জালালুদ্দিন মিংবার্নুর ব্যক্তিত্ব, আব্বাসি খলিফা নাসির লিদিনিল্লাহর অবহেলা, খেলাফত ভিত্তিক জাতীয়তাবোধের অভাব, প্রতিনিধি শাসকদের হীনম্মন্যতা, দুর্বল ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং এ জাতীয় আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর মঙ্গোলদের পতন ও মুসলিমদের পুনর্জাগরণ ও ‘মহাবিজয়’ পর্বে মামলুক সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুজের ব্যক্তিত্ব, বিচক্ষণ নেতৃত্ব, শাহাদাতের তামান্না, উম্মাহর শত্রুদের সাথে অবন্ধুতা, যোগ্যদেরকে দায়িত্ব প্রদান, শক্তিশালি বাহিনী গঠন, জিহাদি চেতনা সৃষ্টি, অভিজ্ঞ আলিমদের পরমার্শ গ্রহণ; আইনে জালুত যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় এবং এর ফলাফল নিয়ে গবেষণাধর্মী আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করছি, বইটি পাঠককে মঙ্গোল ও তাতার সাম্রাজ্যের ইতিহাস সম্পর্কে পরিতৃপ্ত করবে।