“মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
মুসলিম উম্মাহর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এ পর্যন্ত যা কিছু লেখা হয়েছে, তার মধ্যে, কোনো সন্দেহ নেই, ‘মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?’ হচ্ছে সবচেয়ে তথ্যপূর্ণ ও বাস্তবমুখী এবং সবচেয়ে দরদপূর্ণ ও উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী কিতাব। গ্রন্থের শুরুতেই পাঠক পৃথিবীর এক পঙ্কিল মুখচ্ছবি দেখতে পায়। জাহিলায়াতের গাঢ় অন্ধকারে তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। কোথাও সে স্বর্ণরৌপ্যের গাঁথুনিতে শাসকের প্রমোদ-নিকেতন নির্মিত হতে দেখে, সোনারুপার পিপা-পেপায়ালাগুলো তার সামনে মূর্ত ওঠে; আবার কোথা হতে নিষ্পেষিত শাসিতের বুকফাটা আর্তনাত ভেসে আসে, নিপীড়িত মানুষের নিদারুণ হাহাকার তার হৃদয়কে এপার-ওপার করে। অতঃপর সেই আঁধার ভেদ করে ইসলাম-রবির উদয় হয়, যার আলোতে গোটা পৃথিবী আলোকিত হয়। তাওহিদের আহ্বান হেরাগুহা থেকে হিমালয়ের পর্বতশৃঙ্গ পর্যন্ত ধ্বনিত হতে থাকে। মানুষের দাসত্ব ছেড়ে মানুষ দলে দলে আল্লাহর দাসত্বে এবং ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসতে থাকে। পাঠকের হৃদয় উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণার সঞ্জীবনী সুধায় ভরে ওঠে। এরপর লেখকের কলমে বড় বেদনাময় চিত্র ফুঠে ওঠে। সে চিত্র মুসলিম উম্মাহর দুর্দিনের চিত্র, নেতৃত্ব থেকে তাদের দূরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চিত্র, তাদের অধঃপতনের করুণ চিত্র। যে অধঃপতন একদিকে ছিল যেমন আত্মিক, অন্যদিকে তেমনি বাহ্যিক। পাঠকের চোখের সামনেই ইসলামী খেলাফতের পতন ঘটে এবং বিশ্ব-নেতৃত্বের হাতবদল হয়। যে মঞ্চে সত্যের মহিমা কীর্তিত হতো, তাতে পাঠক বস্তুবাদের জয়-জয়কার শোনে। এরপর লেখক তুলে ধরেন, মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারিয়েছে, মানবতার কী ক্ষতি হয়েছে? এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তথা বিশ্বের বিনির্মাণে কী উপাদান প্রয়োজন? ‘মুসলামানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?’ মূল আরবি বইটি আরববিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি পুস্তক। এ পর্যন্ত এর সত্তরোর্ধ্ব সংস্করণ কেবল আরববিশ্বেই প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এটি অনূদিত হয়েছে।