“মাকতুব” বইটির কেন এই বই অংশ থেকে নেয়াঃ
মাকতুব শব্দটির অর্থ হলাে যা লেখা হয়েছে…। তবে আরবেরা মনে করে, এই অনুবাদ যথার্থ নয়। কারণ এতে মনে হতে পারে যে আল্লাহ সবকিছু আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন, ফলে বান্দার কিছুই করার নেই। বাস্তবতা কিন্তু তা নয়। মানুষের অবশ্যই ভালাে-মন্দ বিচার করে কাজ করার দায়িত্ব আছে। আবার সবকিছু লেখা হয়েছে- তাও সত্য। দুটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য আছে। সবকিছু ইতােমধ্যেই লেখা হয়ে থাকলেও আল্লাহ করুণাময় আমাদের সহায়তা করতে চান বলেই এসব কিছু লেখা হয়েছে। এ বইতে সংক্ষিপ্ত যেসব ঘটনা বলা হয়েছে, তা বিবেচনা করা হলে মনে হতে পারে এটিই যথার্থ নামকরণ। এই বইয়ে কোনাে বক্তব্য বা কাহিনী কোনােভাবেই বড় নয়। আবার কোনােটি অপরটির সাথে কোনােভাবে সম্পৃক্তও নয়। তবে প্রতিটি কাহিনীতে রয়েছে গ্রহণ করার মতাে শিক্ষা। পড়তে পড়তে পাঠককে চিন্তামগ্ন হতেই হবে, মুগ্ধতার সৃষ্টি করবে। অতি সরল এসব কাহিনীর মূল্য কিন্তু অমূল্য। কোনাে কোনােটি ব্যাকুলতা সৃষ্টি করতে পারে, আবার কোনাে কোনােটি আপনার চেহারা উজ্জ্বল করে তুলতে পারে মনের মতাে কিছু পাওয়ার আনন্দে। এখানে লিপিবদ্ধ কাহিনীগুলাের কয়েকটি কোয়েলিহাের নিজস্ব সৃষ্টি, বাকিগুলাে সারা পৃথিবীর গল্প ভাণ্ডার, লােককাহিনী থেকে সংগ্রহ করা। প্রতিটি কাহিনীই নিজেকে বদলানাের প্রয়ােজনের কথা মনে করিয়ে দেবে। এগুলাে আমাদের জীবনের অনেক প্রশ্নকে সামনে নিয়ে আসবে : আমার জীবন কোন দিকে যাচ্ছে? আমার সত্যিকার অর্থে কী প্রয়ােজন? আমি এই কাজ কেন করছি? আমাকে সত্যিকারের খুশি করে কোন জিনিসটি- ইত্যাদি ইত্যাদি। কোয়েলিয়াের আগ্রহী পাঠকদের কাছে এই সুর নতুন কিছু নয়। এই সুর বিষয়বস্তু পাওলাে কোয়েলিয়াের অন্যান্য বইয়েও প্রবলভাবে ছড়িয়ে আছে। তিনি ওইসব বইয়ের কাহিনী এসব চিন্তাধারার সাথে এমনভাবে গেঁথে নিয়েছেন যে মনেই হবে না এগুলাে অন্য কোনাে সূত্র থেকে নেওয়া হয়েছে। পড়তে পড়তে পাঠকের ভাবনায় আসবে, লেখক পাওলাে কোয়েলিয়াে কিভাবে গােপন কুঠুরীতে থাকা কথাগুলাে অবলীলায় বলতে পারলেন। আবারাে স্বীকার করতে হবে, তিনি কখনাে উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হন না। এগুলাের কোনাে একটিই জীবনকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করতে পারে। পারে না?