“আজ কোথাও বৃষ্টি হবে না” বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
“অঙ্গনা মেয়েটার জন্য খারাপ লাগেরে মনা।” মা আমার প্লেটে ডাল তুলে দিতে-দিতে কথাটি বললেন। আমি চুপ করে রইলাম। মা আবার বার কয়েক গলা খাঁকারি দিলেন। জ্বর-ক্লান্ত গলায় টেনে-টেনে বললেন, বলতেছিলাম আর কি যোগাযোগ হইছে তোর সাথে?br> মুখ তুলে তাকালাম। সংক্ষেপে জানালাম, না। “না” বলাটা মিথ্যে বলা হয়ে গেলো। অঙ্গনা চলে যাওয়ার আগের রাতেও রহস্য করে দুটো মেসেজ পাঠিয়েছিল।br> প্রথম মেসেজে লিখেছিল, “ইনবক্সে আপনাকে একটা সাঙ্কেতিক জিনিস পাঠাচ্ছি। এর মানে খুঁজে বের করুন। আপনি বুদ্ধিমান মানুষ। আমার ধারণা আপনি পারবেন। উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। br> দ্বিতীয় মেসেজ আসলো এক মিনিট পর। অদ্ভুত মেসেজ। পরপর কয়েকটা ইমো টাইপের ছবি। একটা শকুন, পানির উপর মৃদু ঢেউ, টুলের মতো একটা স্ট্যান্ড, আবার একটা শকুন, আবার ঢেউ, আবার শকুন। ছবিগুলোর আগে লেখা “আপনি কি” আর শেষে লেখা “কে ভালোবাসেন?” br> বুঝতে বেগ পেতে হয় না আমি কাউকে ভালোবাসি কি না জানতে চাওয়া হয়েছে। ছবির মধ্যেই লুকিয়ে আছে সেই একজনের নাম। নামের সাথে ছবিগুলোর সম্পর্ক আছে। মেসেজ-রহস্য আমি উদ্ধার করেছি। জানাইনি কিছু। কখনও দেখা হলে জানাবো হয়তো। অথবা কোনদিনই জানানো হবে না।
এ ধরণের ছেলেমানুষি মেসেজের কথা নিশ্চয়ই মাকে বলার মতো কিছু না। রহস্য দেখে আনন্দ পাওয়ার বয়স তিনি বহু আগে পার করে এসেছেন।br> অঙ্গনার মতো কেউ কেউ থাকে প্র্র্রকৃতি প্রদত্ত আশীর্বাদপুষ্ট। জীবনের কদর্য রূপ এদের তেমন দেখতে হয় না বললেই চলে। br> কিন্তু আমাদের হিসাব ভিন্ন। এখানে অহর্নিশ অভিনয়ের মঞ্চ প্র্র্র¯‘ত। মঞ্চের নাম মধ্যবিত্ত। এখানে কখনও কখনও কোন মেয়ের পাঠানো মেসেজের ধাঁধাঁ খুঁজে বের করার চেয়ে বাবার প্র্র্রেস্ক্রিপশানে লেখা দুর্বোধ্য ওষুধের নাম খুঁজে বের করা বেশী জরুরী হয়ে দাঁড়ায়। বানের জলে ভিটে-মাটি ভেসে যাওয়া মানুষের চোখ আকাশের রঙধনু দেখে আনন্দে অভিভূত হয় না। ভিটের জ্বালা আর পেটের জ্বালা বড় কষ্টের!