মিমির ফারকুন্দা আন্টির ডাকনামটা কম ইন্টারেস্টিং নয়। ভুট্টো। ফারকুন্দা ইয়াসমিন ভুট্টো। ভুট্টোর সাথে বিয়ের আলাপ চলাকালে তার কুয়েতবাসী প্রথম স্বামী বলেছিলেন, পৃথিবীতে মেয়েমানুষের অভাব পড়েছে নাকি তাকে যে একটা দামড়া পুরুষ বিয়ে করতে হবে। কিন্তু কুয়েত থেকে এসে যেদিন পাত্রী দেখতে গেলেন, সুন্দরী মেয়েটিকে দেখে আর দেরি সইল না, তখনই বিয়ে করবেন বলে মুরুব্বিদের ফিসফিস করে বললেন। ছোটখাটো প্রেমঘটিত স্ক্যান্ডাল ছিল বলে পাত্রীপক্ষও দ্রুত কাজটা কাগজে-কলমে সেরে নিল। আসলে নামে কিছুই এসে যায় না। সুন্দরী নারীর নাম ভুট্টো কি ইয়াহিয়া হলেও যা, মেরিলিন মনরো হলেও তাই-ই। মিমির বড়চাচাও লিখতেন, কিন্তু চাচির খবরদারির কারণে তিনি বেশি এগোতে পারেননি। মৃত্যুশয্যায় এটা ওটা বণ্টনের সময় বড়চাচা যখন দেখলেন আসগরী ছাড়া তার পাণ্ডুলিপির সুটকেসের দিকে কারো সামান্য নজরও নেই, তিনি সুটকেসসহ দিস্তা দিস্তা লেখা পুরনো বুয়া আসগরীকে দিয়ে দিলেন। আসগরী ডালা উঠিয়ে কাগজগুলো দেখে, হাতল ধরে সুটকেস উপরে তুলতে চেষ্টা করে, বলে ওজন আছে, কমছে কম দশ কেজি। পত্রিকা হলে ষোলো টাকা কেজি, হাতে লেখা কাগজ তো, দশের বেশি কে দেবে। তারপর হিসেব করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে, দশ দশে একশ। গরিবের একশ টাকাই কম কি! তবু কিছুটা মূল্যায়ন তো হয়েছে। দশ কেজি সাহিত্যকর্মের দাম একশ টাকা। তিনি তৃপ্তি নিয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মারা গেলেন। কিন্তু মিমির গল্পটা কোথায়? আছে, এই উপন্যাসেই। আন্দালিব রাশদীর পাঠক জানেন, তাঁর উপন্যাস হাতে নিলে শেষ না করে ওঠা যায় না।