সাহিত্য বলতে আমি এন্টারটেইমেন্ট বা বিনোদন- সাহিত্যকে বোঝাচ্ছি না। বিনোদক কবি-সাহিত্যিকরা মুক্তবাজারের নিয়ম মেনে তাদের পণ্যসহ নিজেদের বাজার চালু রাখার জন্য যা যা করা দরকার তা করে চলেছেন। যেহেতু ব্যাপারটি বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাই তাদের বাজারের নিয়ম মেনেই চলতে হয়। পাঠকরুচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাদের পণ্য নির্মাণ করতে হয়, তাদের পণ্যের প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন দিতে হয়, বিভিন্ন মিডিয়াতে বিভিন্ন চেহারাতে হাজির হতে হয়, টকশো থেকে রান্নাবান্নার অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সুযোগ নিশ্চিত করতে হয়, প্রয়োজনমাফিক স্টান্টবাজি করতে হয়, পদ-পদবি এবং পুরস্কার চেয়ে-চিন্তে, লবিং করে, এবং প্রয়োজনবোধ জোর খাটিয়ে কেড়েই নিতে হয়। যেহেতু বাজারের প্রতিযোগিতা, তাই কোনোকিছুই হাস্যকর নয়, কোনোকিছুই নিন্দার্হ নয়। তাদের সপক্ষে রয়েছে অমোঘ প্রবাদের যুক্তি-নাচতে নেমে ঘোমটা দেয়া চলবে না। এন্টারটেইনাররা বা বিনোদকরা যা করছেন, তা মুক্তবাজার অর্থনীতির নিয়ম মেনেই করছেন। সাহিত্যের মূল কাজ তো মানুষের ভেতরের ‘আসল মানুষ’টিকে, একেবারের অন্তঃস্থলের সেই ‘মৌলিক মানুষ’টিকে আহ্বান করা। সাহিত্যের কাজ হচ্ছে মানুষকে তার ভেতরের ‘আসল মানুষের’ মুখোমুখি দাঁড় করানো, যাতে সে প্রতিমুহূর্তে জেনে নিতে পারে যে সে প্রকৃত মানুষের জীবনযাপন করতে পারছে কিনা। এই প্রবন্ধগুলো সেকথাই বলতে চেয়েছে।