“ইরান সংকট ও উপসাগরীয় রাজনীতি” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
ইরান সংকট ও উপসাগরীয় রাজনীতি গ্রন্থটি পারস্যীয় উপসাগরে চলতি বছরের শুরুতে সংঘটিত হওয়া ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত। এই গ্রন্থটিতে ইরান সংকটের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে। ইরানি রেভ্যুলেশনারী গার্ড কমান্ডার মেজর জেনারেল কাশেম সােলামানিকে হত্যা এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইত্যাদি ঘটনাবলি মূলত দুটি বড় আঞ্চলিক শক্তি সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার প্রভাব বলয় বিস্তারের রাজনীতির ফলশ্রুতি। এই প্রভাব বলয় বিস্তারের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষভাবে উপসাগরীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে গেছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরেই একই ধরনের প্রক্সিওয়ার চলছিল। আর এই প্রক্সি ওয়ারে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দুটি পক্ষ। একদিকে সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে যেমনি জন্ম হয়েছিল রাশিয়া-তুরস্ক-ইরান অক্ষের, ঠিক তেমনি যুক্তরাষ্টের অবস্থান এর বিপরীতে।
এই পরস্পর বিরােধী পক্ষ এখন সম্প্রসারিত হয়েছে ইরানে। ইরানের পাশে আছে রাশিয়া (সেই সাথে চীন) ও তুরষ্ক । অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সৌদি আরব-ইসরাইল শিবিরে। ইরান সংকটকে কেন্দ্র করে দুই বড় শক্তি, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এ অঞ্চলে তাদের প্রভাব ও কর্তত সম্প্রসারিত করেছে। আমরা নতুন করে যে স্নায়ুযুদ্ধের কথা বলছি, এই স্নায়ুযুদ্ধের একটি বড় অংশ হচ্ছে এই পারস্যীয় উপসাগরীয় অঞ্চল। ইরান সংকটের অনেকগুলাে মাত্রা আছে। এ অঞ্চলের ‘গ্যাস রাজনীতি, ইসলামিক স্টেট বা আইএসের নতুন করে উত্থান পারস্যীয় উপসাগরের রাজনীতিকে আরাে উত্তপ্ত করবে। এতে করে বৃহৎ শক্তি এ অঞ্চলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আরাে বাড়বে। ইরানে ইসলামিক বিপ্লব (১৯৭৯) এ অঞ্চল তথা মুসলিম বিশ্বে চমক সৃষ্টি করেছিল। সেই ‘বিপ্লব’ এর মােহ এখন ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। খােদ শীর্ষ ধর্মীয় নেতা খামেনীর বিরুদ্ধে মিছিল ও স্লোগানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন যতই থাকুক না কেন, ইরানি বিপ্লব তার লক্ষ্যে পৌছতে ব্যর্থ হয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের চলমান রাজনীতিতে এটা একটা নতুন মাত্রা। গ্রন্থটিতে প্রতিটি বিষয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।