“দূরের স্বজন” উপন্যাসটি অপরূপ মহিমায় ভাস্বর এক নারীর আখ্যান যা ঐশ্বৰ্য্যময় হয়ে উঠেছে, স্বামীর প্রথমা পত্নীর সন্তানের প্রতি তীব্র ভালােবাসায়। রক্তের সম্পর্ককে ছাপিয়ে মাতৃত্বের চিরন্তন পিপাসায় এক নারী নিবিড় স্নান করতে চেয়েছেন। সেই টানাপােড়েনে তার দিন রাত্রির যে ভাঙাগড়ার জাল বুনন তা এক কবির উপলব্ধিময় চেতনায় ও ছন্দিত উচ্চারণে চিত্রিত হয়েছে। উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র উঠে এসেছে আমাদের সমাজের চারপাশ থেকে। এই সমাজেরই কোনাে এক পরিবার ছেলে তুহিন’ তার মা ‘সরমা আর তার সৎ- মা বাণী এবং বাবা দিবাকর’ -কে নিয়ে এই আখ্যান। ভৌগােলিক সীমার মধ্যে হয়তাে কোথাও বনশ্রীনগর’ নামে কোনাে গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না কিংবা পাওয়া যাবে। তা জানার প্রয়ােজন নেই। সেই অজানা। অচেনা। গ্রামের কোনাে মানুষের পারিবারিক আখ্যান। যা কারাে না। কারাের জীবনের প্রতিফলিত রূপ। মানুষের সম্পর্ক ও বৈচিত্র্যময় জীবনের ঘটমান আলাে আঁধারি খেলা। যা পাঠককে বিমােহিত করবে, সন্দেহ নেই। দূরের স্বজন পাঠককে দাঁড় করিয়ে দেবে সম্পর্ক নামক শব্দটির এক নতন সংজ্ঞায়। এবং সৎ-মা সম্পর্কে চিরন্তন ভাবনা বদলে যেতে পারে। ভাষা, ভাবনা, মানবিকতা, মমত্ব নিয়ে এক কথায় উপন্যাসটি অনবদ্য। মাতৃত্বের শাশ্বত আবেদনের বিমূর্ত প্রতিফলন। স্বামীর প্রথম সন্তানের প্রতি মমত্ববােধ, ঘটনাপ্রবাহে চরিত্রগুলির বদল সমগ্র উপন্যাসটিকে গতিদান| করেছে। বাংলা উপন্যাসের ক্ষেত্রে এক অন্যতম সংযােজন।