আমাদের চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক শুরু হয়েছে। এমন দৃশ্যকল্প থেকে : ‘শেষ ট্রেন চলে যাওয়ার পরও আমি বসে থাকি স্টেশনের উল্টো দিকে দু’মুখ খােলা সিমেন্ট-লােহার বড় বড় পাইপগুলাের ওপর। একটু শীত-শীত লাগছে। এখন জামাটা ভালাে করে টেনেটুনে আরও জড়সড় হয়ে বসে শীত কমানাের চেষ্টা চালাই আর মনে মনে চিন্তা করি, বড়ভাইকে নিশ্চয়ই আর্মিরা খুব মার দিচ্ছে। এরপর গােটা উপন্যাসে ধরা আছে সামরিক শাসন ধ্বস্ত বাংলাদেশ-যাপিত সেই ইতিহাস- ইমতিয়ার শামীম আমাদের সামনে মেলে ধরেছেন তার শক্ত কলমে। যা পায়ে পায়ে এগিয়ে আসে একেবারে সমকালেও। আর আমরা পড়ি : আরও একটু পর আমরা জানতে পারি, ক্রসফায়ারে একজন মারা গেছে। কেননা ক্রসফায়ারেই মারা যেতে হয়। কেননা ক্রসফায়ারই গন্তব্য আমাদের সকলের। আমি বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে চিন্তা করি, আরও এক বড়ভাই মারা গেল হয়তাে। হয়তাে আরও একটি রূপকথা লেখা হলাে।… কেননা চিঠিযুগ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই, থেমে গেছে। কুউউ ঝিকঝিক এ উপন্যাস সম্পর্কে কথাশিল্পী আফসানা বেগম লিখেছেন : “এটি কেবল একটি মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া অনিশ্চিত ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনা নয়, এটি একটি যুগের বর্ণনা, একটি দলিলের মতাে। কার্লোস ফুয়েন্তেসের কথামতাে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে কল্পকাহিনি লেখকের যে দায়িত্ব থাকে-বানানাে কিছু চরিত্রের অবয়বের আড়ালে নিজের জীবদ্দশার সময়টাকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরা আর তার মাধ্যমে বিশ্বসাহিত্যে অংশগ্রহণ করা’-সেই জায়গাটিতে লেখক ইমতিয়ার শামীম পুরােপুরি সচেষ্ট ছিলেন এবং সফলতাও পেয়েছেন।”