রেজাউদ্দিন স্টালিন বাংলাদেশের কবিতাভুবনে প্রাজ্ঞ কণ্ঠ; আশির দশকে আবির্ভূত হয়ে ইতোমধ্যে সমগ্র বাংলা কবিতায় নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন একটি স্বকীয় কাব্যভুবন। আত্মতা এবং আমিত্বই স্টালিনের সাহিত্যকর্মের মুখ্য উপজীব্য নয় বরং এক বৈশ্বিক সর্ব মানবের সংগ্রাম ও সাফল্যের ঐতিহাসিক শিল্পীত দলিল তাঁর কবিতা। আত্মপ্রীতি, দুঃখবোধ আর স্বপ্নপীড়িত বেদনা নিয়ে স্টালিন ডুবে থাকতে চেয়েছেন তাঁর অন্তস্থলে; কিন্তু সংবেদনশীল শিল্পসত্তা তাঁকে অন্তর্লোকের অতল থেকে বার বার তুলে এনেছে বহির্লোকের প্রাঙ্গণে। সময়জ্ঞান, ইতিহাসচেতনা, পুরাণস্মরণ এবং মৃত্তিকা সংলগ্নতার শক্তি নিয়ে রেজাউদ্দিন স্টালিন অতিক্রম করে যান তাঁর কালের বৈনাশিকতা আর বিভক্ততা, সময়ের নষ্ট আক্রোশ। পৌরণিক উৎস থেকে স্টালিন পৌনঃপুণিকভাবে চয়ন করেছেন তাঁর বিজ্ঞানমনস্ক ভাবনার বীজ, তাঁর কব্যাঙ্কুর। স্টালিনের কৃতিত্ব এই-তাঁর জাদুবাস্তবতা ও পুরাণচেতনা সমকালসংলগ্ন ঐতিহ্য এবং পুরাণকে পুনর্লিখন না করে তিনি তাকে করে তোলেন প্রতিঅর্থে সৃষ্টিশীল। সংরক্ত স্বকালের সঙ্গে সংলগ্ন হয়ে স্টালিনের কবিতা পুরাণ বিকিরণ করে নতুন মাত্রা, নবতর ব্যঞ্জনা। আর তিনি হয়ে ওঠেন এই উপমহাদেশের আন্তর্জাতিক কণ্ঠস্বর। বিশ্বজিৎ ঘোষ
উপাচার্য, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়