সাহিত্য-চিন্তার ক্ষেত্রে বিকল্পের সুযোগ কম। কিন্তু চিন্তা সব সময় বিকল্প। যে চিন্তা চালু আছে তাকে এগিয়ে নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি তাকে চ্যালেঞ্জ করা কম জরুরি নয়। চিন্তা সবার মধ্যে একই মাত্রায় ধরা না দিলেও কোথায় যেন নতুন চিন্তার দরকার হয়ে পড়ে-কালের প্রয়োজনে যন্ত্রের বিবর্তনে। তবে সকল কিছুর উপরে রয়েছে মানব শরীরের শ্রম ও বাণিজ্যিক দিক-যাকে নিরাপদ ও দখল করার লড়াই সব কালে। সাহিত্য যদিও সরাসরি এই রাজনীতিতে খুব একটা জড়াতে চায় না; তবু তাতে ধরা পড়েছে এই লড়াইয়ের গতিশীল মনস্তত্ত্ব ও উপেক্ষিত ইতিহাস। মানব মনের সব ভাবনা, কুটিলতা-জটিলতা, কল্যাণ করার আকাক্সক্ষা, নর-নারীর প্রেম-অবিনশ্বর চেতনা ধরা পড়েছে সাহিত্যে। সাহিত্য ও চিন্তার এই সব ভিন্নমুখী সংশ্লেষ ঘটেছে বর্তমান গ্রন্থে।
মুক্তবুদ্ধির চর্চা, বিষয়ের গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা, প্রশ্ন উত্থাপন এবং যুৎসই ব্যাখ্যা হাজির করার ক্ষমতা মজিদ মাহমুদের প্রবন্ধের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। চিন্তাশীল প্রবন্ধ সাহিত্যের সংকটকালে তাঁর গভীর অনুধ্যান ও অব্যাহত অনুসন্ধান ইতিমধ্যেই তাঁকে করে তুলেছে প্রাতিস্বিক। তাঁর প্রবন্ধ কেবল তথ্য-উপাত্তের সংগ্রহ হয়ে না থেকে সাহিত্যের ভেতর দিয়ে জীবনের যে কৌতূহলী প্রকাশ তাকেই ধরতে চেষ্টা করেছে। মজিদ মাহমুদের প্রবন্ধ এক ভিন্নধর্মী অনুসন্ধিৎসু চিন্তাকে উসকে দেয় এবং প্রজ্ঞাদৃষ্টিতে আধুনিক বোধবুদ্ধির স্তরচর্যা যেন তাঁর প্রবন্ধে প্রতীয়মান। বিচিত্র মানবসত্তার অধিকারী প্রশ্নের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে যেন মজিদ মাহমুদ পাঠকদের সামনে হাজির হন।