১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলন গণ-আন্দোলনে পরিণত হয়। পরে ১৪৪ ধারা ও কার্ফু ভঙ্গ, পুলিশ-ইপিআর-এর গুলিবর্ষণ, বহু হতাহতের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নিলে আইয়ুব সরকার ১ ফেব্রুয়ারি গোলটেবিল বৈঠকের আহবান জানায় এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রত্যাখ্যান করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি জনগণের অব্যাহত চাপের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য আসামিকে মুক্তিদানে বাধ্য হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে কারামুক্ত শেখ মুজিবের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। লাখো জনতার এই সম্মেলনে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়। উপাধি ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর ভিপি এবং সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক তুখোড় ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ। এ সভায় রাখা বক্তৃতায় শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের এগারো দফা দাবির প্রতি তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।
‘২১ দফা, ৬ দফা ও ১১ দফা’র প্রত্যেকটি ঘটনার সাথেই বঙ্গবন্ধু ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে এসব ঘটনাবলি ধীরে ধীরে একটি স্বাধীন দেশের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। সকলের প্রিয় এই বাংলাদেশ এমনি এমনি অর্জিত হয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের এই অসম সাহসী ও দূরদর্শী নেতার যদি জন্ম না হতো তাহলে বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের জন্ম হতো না। তাই এই বইয়ের মূল প্রতিবাদ্য ‘২১ দফা, ৬ দফা, ১১ দফা ও বঙ্গবন্ধু’। আশা করছি বইটি পড়ে তরুণ প্রজন্মসহ সকলেই বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীন বাংলাদেশকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাবেন এবং স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবেন।