“দহন” বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা
একজন যুদ্ধশিশু হাজেরা বেগম আর তার স্বামী চানমিয়া, সন্তান রাহুল। জীবনের শতাে দুঃখ কষ্টের সাথে বসবাস করলেও এই সাতচল্লিশ বছর এই যুদ্ধশিশুর গল্প কারাে জানা ছিলােনা । নিজের জানা নিজের জীবনের এই মর্মান্তিক গল্পকথা। অবশেষে সন্তানকেই শােনাতে হয় অবিশ্বাসের পর্দা সরাতে । নিজের দহন কষ্ট লালন করেই চলছে ঘর সংসার প্রেম আর সন্তানের জন্য উৎকণ্ঠা। সে বলতে চেয়েছিলাে তার জীবনের ওই না বলা কথাটুকু। অপেক্ষায় ছিলাে জীবনের মূল শেকড় ছাড়া গল্পটি বলার জন্যে।
কিন্তু জীবনের তৃষ্ণা আলাে অন্ধকার আর বাস্তবের আলােড়িত অধ্যায় অতিক্রম করতে করতে বেলা বয়ে যায়। গােপনের যে দহন আর নিজের অন্তর্জগতের বিরহ, সাথে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুননের তীব্র আকাঙ্ক্ষা হাজেরা বেগমকে অস্থির করলেও শেষ পর্যন্ত বলা হয় নিজের গল্পকথা একান্ত মূহুর্তে নিজের ঔরসজাত সন্তানকেই। বলা হয় জীবনের সংগ্রাম কোলাহল অভাব রক্তাক্ত অনুভূতির সকল টানাপােড়েন। কিন্তু যে ভয় তাকে আঁটশাঁট করে আটকে রেখেছিলাে, তা থেকে মুক্তি পেলেও স্বামীকে সন্তানকে নিয়ে আর হলােনা জীবনের মসৃণ পথ চলা। উপন্যাসের সেই চরিত্রটি ধীরে ধীরে চলতে থাকে মর্মান্তিক পরিণতির দিকে। হয়ে ওঠে এক হৃদয়বিদারক চিত্রাংশ।
পাঠকের অনুসন্ধানী চোখের তারা জুলজুল করে ওঠে ঘটনা প্রবাহ অন্মেষণের জন্য। শাওন আসগর বহুমাত্রিক লেখক। তার লেখার বিষয়বস্তু আঙ্গিক বর্তমান অনেক অপসাহিত্যের আধারকে আলােয় নিয়েছেন। নগর আর গ্রাম্য পরিবেশের দৈনন্দিন কঠিন পরিক্রমাকে স্পষ্ট করে এনেছেন যা পাঠক সহজেই অনুধাবন করবেন। যুৎসই শব্দের প্রাণবন্ত সংলাপে শৈল্পিক বিন্যাসে পাঠকের সামনে ছিটিয়ে দিয়েছেন ভালােবাসার মূর্ত চিত্রকল্প। পূর্বের গ্রন্থগুলাের মতােই বর্তমান উপন্যাস দহন পাঠকপ্রিয়তা পাবে-এমন প্রত্যাশা।
-প্রকাশক