কিশোর উপন্যাসসমগ্র ১ম-৬ষ্ঠ খণ্ড কালেকশন

৳ 3.00

লেখক
প্রকাশক
ভাষা বাংলা
সংস্কার 1st published, 2021
দেশ বাংলাদেশ

সূচি
* দীপু নাম্বার টু
* আমার বন্ধু রাশেদ
* হাতকাটা রবিন
* টি-রেক্সের সন্ধানে
* জারুল চৌধুরীর মানিকজোড়
* দুষ্টু ছেলের দল

ভূমিকা
তোমরা কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস কর আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ কি, আমি কি বলব জান? আমি বলব, আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ যে আমি বড় হয়ে গেছি! আমার চমৎকার শৈশবটি আমার হাতছাড়া হয়ে গেছে, আর কখনো আমি সেটা ফিরে পাব না।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আমি যখন তোমাদের জন্য লিখি হঠাৎ হঠাৎ আমার সেই হারিয়ে-যাওয়া কৈশোর এসে আমার কাছে ধরা দেয়! মনে হয় আবার আমি ছোট হয়ে গেছি, তখন আমি উপন্যাসের চরিত্রদের সাথে মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াই, বিচিত্র সব অ্যাডভেঞ্চারে অংশ নিই, আর আমার বুকের ভিতরে আশ্চর্য এক ধরনের আনন্দ হতে থাকে।

এই বইয়ের উপন্যাসগুলো পড়ে তোমরা যদি আমার সেই আনন্দটুকু একটুখানিও অনুভব পার আমার আর কিছু চাইবার নেই।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
পল্লবী, ঢাকা।
ভূমিকা
ছোটদের জন্যে লেখালেখি করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। তারা কখানো কোনকিছু নিয়ে ভান করে না।যেটি পছন্দ সেটি জানাতে তাদের যেরকম কার্পণ্য নেই ঠিক সেরকম যে-লেখাটি তাদের পছন্দ নয় সেটিও জোরগালায় বলে ফেলতে তাদের কোন সংকোচন নেই। কোন পরিণত বয়সের মানুষ আমার লেখালেখি নিয়ে গায়ে পড়ে এসে আমাকে অভিযোগ করে গেছেন বলে মনে পড়ে না, কিন্তু খুদে পাঠকদের অসংখ্য টিঠিতে আমি তাদের অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি। তাদের সবচেয়ে বড় অভিযোগটি এসেছে ছোট ছোট মেয়েদের কাছ থেকে, তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে জানতে চেয়েছে আমার কিশোর গল্প-উপন্যাস-অ্যাডভেঞ্চারে কোন মেয়েরচরিত্র নেই কেন।
অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর কারণ অভিযোগটি সত্যি। শৈশবে আমি ‘ছেলে’ হয়ে বড় হয়েছি, কাজেই একটি ছেলে কীভাবে ভাবনাচিন্তা করে, কীভাবে তার মাথায় দুষ্টুবুদ্ধি খেলা করে সেগুলি খুব ভালো করে জানি তাই লিখতে বসলে মুরেফিরে তাদের কথাই চলে আসে।এটি হচ্ছে আসল কারণ, কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী এটি একটি দুর্বল কৈফিয়ত এবং কিছুতেই ভালো যুক্তি নয়।মহাজগতের কোন প্রাণী না দেশে, দূর গ্যালাক্সিতে হাজির না হয়ে কিংবা রবোটদের সাথে বাগবিতণ্ডা না করেই যদি সেসব নিয়ে সায়েন্স ফিকশান ফেঁদে ফেলতে পারি তা হলে আশেপাশে এত ছোট ছোট মেয়েদের দেখেও কেন তাদের চরিত্র আমার গল্প-উপন্যাসে হাজির করতে পারব না?
কাজেই আমি আমার অপরাধ খণ্ডন করার জন্যে আমার গল্প-উপন্যাস-অ্যাডভেঞ্চারে ছেলেচরিত্রের পাশাপাশি মেয়েচরিত্র তুলে আনার চেষ্টা করেছি। চরিত্রগুলো হয়তো একটু বেশি দুষ্টু বেশি ডানপিটে, কিন্তু ‘মেয়ে’সে-ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।এই উপন্যাসসমগ্রে যে-কয়টি উপন্যাস স্থান পেয়েছে তার প্রত্যেকটির বেলাতেই এই কথাটি সত্যি, এটা আমি মোটামুটি জোর গলাতেই বলতে পারি!
আমার খুদে পাঠক-পাঠিকারা এবারে আমার ‍বিরুদ্ধে নতুন কোন অভিযোগ এন হাজির করবে সেটি জানার জন্যে সশঙ্কচিত্তে অপেক্ষা করছি। তবে এই বেলা বলে রাখি আমার এই পাঠক-পাঠিকারা শুধূ যে আমার কাছে অভিযোগ করে সেটি কিন্তু সত্যি নয়। তারা নানা সময় নানাভাবে আমার জন্যে এত গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছে যে আমার মনে হযেছে একজন মানুষ তার জীবনে যা পেতে পারে আমি তার সবটুকুই পেয়ে গেছি। সত্যি কথ বলতে কী আমার যেটুকু পাওয়ার ছিল তার থেকে অনেক বিশ পেয়ে গেছি-এখন সময় হয়েছে খানিকটা ফিরিয়ে দেয়ার।
আমার এই খুদে পাঠক-পাঠিকাদের ভালোবাসা কীভাবে ফিরিয়ে দিই এখন সেটাই আমার একমাত্র ভাবনা!

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা
১৬ জানুয়ারি ২০০০

সূচিপত্র
*স্কুলের নাম পথচারী
*রাজু ও আগুনালির ভূত
*বকুলাপ্পু
*বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর
*বুবুনের বাবা
*নিতু আর তার বন্ধুরা

বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ